পুরাতন ডাইরির পাতা ( বন্ধুর ভাললাগা মেয়েটি) ২
বন্ধুর সুন্দরি রূপসী, স্বপ্নের রাজ কুমারির দুপরের খাবার খেয়ে স্কুলে ফিরে আসল। এখনও টিপন এর সম্য শেষ হয় নি। ঐ দিকে স্কুল বারান্দায় বন্দধুর চিঠিখানা ৩ বান্ধবিকে সাথে নিয়ে পড়তেছে। এই দেখে আমার মনে ভয় লাগতেছে কি যেন হয়। আবার শরির কাপ্তেছে, ওরা চিঠি পড়তেছে আর আমার দিকে বার বার পিরে তাকাচ্ছে। কি করি আজ ভেবে না পাই পথ হারিয়ে কোন বনে যাই। টিপন এর সম্য শেষ দপ্তরী কাম ডং ডং করে ব্যাল বাজাল। কেলাসে চলে গেলাম।
মাস্টার আসলো। পড়া লেখা শুরু হল। কিন্তু লজ্জা আমারে ঘিরে রেখেছে। বন্ধুর জন্য যে কাম করলাম। কত বড় সাহজ, প্রেমপত্র পোঁছে দিলাম। কি লিজ্জা, কেলাসে লজ্জা্য হাতে বই নিয়ে মাথা নিছু করে পড়া শুরু করে দিলাম । ১ ঘণ্টা শেষ হল স্কুলের ঘন্টা বেজে গেল। পরের মাস্টার এল। পড়া শুরু হল।
আগের মত সময় আর যাইনা। টেনশন কাজ করতেছে, মনের অস্তিরতায় আর ভালো লাগের না। যানি না মেয়েটা চিঠিখানা পড়ে উত্তরে কি বলে। আল্লাহ, আল্লাহ জিকির করে কেলাসের সময় পার করি। এইদিকে ঐদিকে তাকাই, নিরব নির্তেজ জং ধরা অচল পয়সা। কি যে করি, জানালার দিকে দারোয়ান কে দেখতে পেলাম মনে হয় ছুটির ঘণ্টা দেবে। না এইটা আমার মনের ধারনা, ঘণ্টা আর বাজে না। সময়ও শেষ হয় না। কি সর্বনাশ, ওরা তিন বান্ধবি আমার দিকে বার বার ফিরে চায়। এই দেখে আমার মনে ভিতর মুচড় মারতেছে, কি যে বলে ছুটি হলে। মনে সাহস বাড়ার জন্য বুকের মাঝে শুধু থুথু দিয়ে যাচ্ছি কিন্তু সাহস আর বাড়ে না। যানিনা কোন মোহা সাহসি থুথু দেওয়ার মন্ত্র আবিস্কার করছে। তাকে কাছে পেলে বলতাম এই মন্ত্র দিয়ে সাহস হচ্ছে না অন্য মন্ত্র দেন। কি আর করা ঐ থুথু আবিষ্কার সাহসি বেক্তিকে খুজে পাবনা। যা করার নিজেকে করতে হবে।
ভাবনা চিন্তা করতে করতে ঘণ্টার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে। ওয়াও, কি শান্তি। শান্তির কোপালে দুর্গতি। বই হাতে নিয়ে আগে যাবো তাহার কন্ন বেবস্তা নাই। এখানেও দুর্নীতি। আসলে তা না, কারন মেয়েদের বসার স্থান দরজার সাথে। যাকে বলে, লেডিস ফাস্ট। মেয়েরা আগে ছেলেরা পরে। কি আর করা, মেয়েরা আস্তে আস্তে বাহির হচ্ছে। কচ্ছপ গতিতে, ঐ দিকে নজরের বন্ধুক তাক করে তিন বান্ধবি বসে আছে। এই দিকে আমার মনে কালবৈশাখীর বজ্রপাত সৃষ্টি হচ্ছে। কি হতে যাচ্ছে আল্লাহ্ ভালো জানে, শরীরে ভিতর কে যেন আগুন জ্বালাই দিল ঘাম বাহির হইতেছে। এইদিকে সব মেয়েরা বাহির হয়ে গেল ওরা দিন বান্ধি এখনো বসে আছে। বুঝতে কষ্ট হচ্ছে না, কিছু বলবে হইত তাই বসে আছে। মেয়েরা সব চলে গেল, বাকী ওরা তিনবান্ধবী। এখন ছেলেরা বাহির হচ্ছে, আমিও চুরের মত মাথা নিছু করে বাহীর হয়ে যাচ্ছি। হাত পা কাপ্তেছে, জস হাজির। দরজার সামনে আস্তে না আস্তে আমাকে ডাক দিল ঐ বেয়াই একটু দাড়াও।
প্রেমের খাদিরে নতুন নামের উপাদি (বেয়াই)। আমি অবাক হয়ে গেলাম এটা আবার কেমন ডাক। চুরির আসামি, বেকসুর খালাস। মনে মনে ভাবতেছি, চিঠি আদান প্রদান করলে তাকে বেয়াই ডাকে। চিন্তার রেখা সরে গেছে, মনে বন্ধুর প্রেমের নতুন আশা জাগ্রত হল। আগে জানতাম, চিঠি আদান প্রদানকারিকে পিয়ন বলে। আ-হ, যাহোক কি মজা। মনের ভীতর নতুন এক সুর বাজে, আকাশে বাতাশে। এই দিকে আমি ওদের ডাক শুনেও না শুনার ভান করে লজ্জাবতী পাতার মত চিবিয়ে ক্লাস থেকে বাহীর হয়ে গেলাম। মিটিমিটি হেসে এক পা, দুপা করে স্কুলের শেষ প্রান্তে বারান্দাই গিয়ে দাঁড়ালাম ৩ বিয়াইনের জন্য। ওরা আসতেছে...। নতুন আশা জেগেছে মনে,
এখনো স্কুলের সব ক্যালাশের ছুটি হয়নি। ওরা আসলো, বন্ধুর পছন্দের মেয়েটি আমার সামনে এসে বলল বেয়াই এইটা কি দিলে আমায়। মৃত হাসি দিয়ে বললাম কেন!!! চিঠি। চুপ হয়ে দাড়িয়ে আছি, ও আমাকে বলে চিঠি কি ৪ পাতা হয়। অ-আল্লাহ্। আমার মনের কথা, জীবনে কাউকে কোন প্রেম পত্র লেখে প্রেম প্রপোজ করি নাই। আমি কি জানি, অভিজ্ঞতা নাই। হইত বন্ধুর মনে অনেক কথা জমা ছিল তাই বেশি প্রকাশ করেছে। ঠিক আছে, কথা বাড়িয়ে লাভ নাই। তোমার বন্ধুকে দিয়ে দেবে আমার লাগবে না।!!! কি শুনলাম। মনে হয় প্রেমের বাগানে ভালোবাসার ঠাডা পরেছে।
আমিও ত্যাড়া ভাষায় বললাম- চিঠি না লাগ্লে নিলে কেন? এখন আবার চিঠি ফেরত দিবে কেন? আমি নিতে পারবনা! যার চিঠি তাকে দিলে খুশি হব। কে শুনে কার কথা, হাত বাড়িয়ে আমার বুক পকেটে দিতে গেল। এমন সময় আমি পিছে শরে গেলাম। চিঠি খানা মাটিতে পরে গেল। ঠিক ঐ সময় অন্য ক্যালাশের ছুটি হল। ছাত্রছাত্রীরা হৈ উল্লাহ্ করে বাহির হতে লাগল। সর্বনাশ হয়েছে। এই প্রেম পত্রের কি পরিণাম হবে জানি না। বেহায়া, লজ্জাহীন ভাবে বারাণ্ডায় স্থির দাড়িয়ে আছি চিঠিখানা কুড়িয়ে নেওয়ার জন্য। ওরা বকার পাল।
চিঠি মাটিতে পড়ে আছে। সব ছেলেমেয়েদের পায়ের নিছে ঘড়া ঘড়ী খাচ্ছে। তখন আমার মনে খুব যন্ত্রনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। প্রেম করি নাই, মাগার। প্রেমের যন্ত্রয়া কাকে বলে কিছুটা অনুমান করতে পারতেছি। কি কষ্ট করুণ নীরব যন্ত্রণা। জানি না, বন্ধুকে কি বলে শান্তনা দেবো। বন্ধুর পছন্দের মেয়ে, স্বপ্নের নায়িকা। কল্পনার রাজ কুমারি চিঠি ফেরত দিয়ে দিল।