পুরাতন ডাইরির পাতা ( বন্ধুর ভাললাগা মেয়েটি) প্রথম অংশ
পুরাতন ডাইরির পাতা ( বন্ধুর ভাললাগা মেয়েটি) দ্বিতীয় অংশ
হাদিসে কুদসিতে রয়েছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি ছিলাম গোপন ভান্ডার; ভালোবাসলাম প্রকাশ হতে, তাই সৃজন করলাম সমুদয় সৃষ্টি। আল্লাহর কুদরতের জগতে ভালোবাসাই হলো প্রথম সম্পাদিত ক্রিয়া বা কর্ম। এই ভালোবাসা পবিত্র কোরআনে ৭টি পর্বে ৬৩ বার উল্লেখ হয়েছে। আরও পড়ুন
পুরাতন ডাইরির পাতা ( বন্ধুর ভাললাগা মেয়েটি) তৃতীয় অংশ
বন্ধুর পছন্দের মেয়ে, স্বপ্নের নায়িকা। কল্পনার রাজ কুমারি চিঠি ফেরত দিয়ে দিল। মেয়েটি হ্যাঁ বা না কিছু বল্লনা। অপমান না ঘৃণা জানি না। তবে মনে মনে মেয়েদের প্রতি ঘৃন্যা জমে গেল। মেয়েরা মায়ের জাত, মেয়েরা বোন যাহোক এক জন প্রেমিকার কাছে এক জন মেয়ে কি, যে যেই রুপে স্বপন দেখে সেই জানে। আমি প্রেমিক নয়, তারপরেও বলব কেন এমন করল। ভালো লাগ্লে হ্যাঁ বলবে আর ভালো না লাগ্লে, না বলবে। তা হলে সব কিচ্ছা খতম। এই দিকে সব ছাত্রছাত্রী চলে গেল। শূন্য স্কুল, নিষ্ফল আমি। চিঠি খানা হাতে নিয়ে ঐখান থেকে রওনা দিলাম।
আস্তে আস্তে বাড়ির দিকে হেটে যাচ্ছি আর ভাবতেছি বন্ধুকে কি জবাব দেব। ২০ মিনিটের পথ প্রায় ৫০ মিনিটে হেটে বাড়িতে গেলাম। পেটে খুব খিদে, শার্ট পেন্ট খোলা বাদ। তাড়াতাড়ি করে ভাত খেয়ে নিলাম। এতো তাড়াতাড়ি কখনো ভাত খেয়েছি কি না মনে পড়ে না। স্কুলের শার্ট পেন্ট খুলে লুঙ্গী পরলাম।বন্ধুকে খবর দেওয়ার জন্য বন্ধুর লেখা ফেরত চিটি খানা হাতে নিয়ে ঘর থেকে বাহির হলাম।
হায় কপাল, বন্ধু খবরে আশায় ভালোবাসা বুকে নিয়ে অপেক্ষাই বসে আছে আমাদের বাড়ির সামনে। ভালোবাসা কি জিনিস। কথায় আছে, দিল্লিকা লাড্ডু খাইলেও পস্তাবেন, না খাইলেও পস্তাবেন। বন্ধু আমার মিষ্টি হাসি দিয়ে আমন্ত্রন জানাচ্ছে কিন্তু আমি মিষ্টি বা কষ্টের হাসি হাসতে পারতেছি না। কেমন করে হাসব! বন্ধুর পছন্দের মেয়ে, স্বপ্নের নায়িকা, কল্পনার রাজ কুমারি মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছে। ছি, তুচ্ছ আমি ভালোবাসার পিয়ন, সামান্য একটা কাজ সফল করতে পারলাম না। বন্ধুর ভাললাগা ঐ মেয়েটি আমার হাসি কেড়ে নিয়েছে। তাই বন্ধুকে হাসির উত্তর দিতে পারলাম না। আমার মত এমন পিয়ন কেউ হয়ও না। প্রেম উক্তিঃ প্রেম ভালোবাসার রাস্তাটি শুরুতে দীর্ঘ ও কঠিন মনে হয় কিন্তু যারা একবার প্রেম ভালোবাসার স্বাদ পেয়েছে তারা জানে ভালোবাসা কি। যাত্রা শেষের পরিণতির কথা প্রেমিক প্রেমিকা ভাবে না। তাই আমার শুভেচ্ছা প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্য। সাবধানঃ প্রেমের নামে অশ্লীল কিছু কর না।
মলিন চেয়ারা নিয়ে বন্ধুর সামনে হাজির, চল বন্ধু তুর বাড়ির পাশে সাকু- পুলের ওখানে। অনেক কথা আছে বলার। হাটতে হাটতে বিরহের বানী, দুস্ত মন খারাপ করিছ না, তুর কল্পনার রাজ কুমারি চিঠি খানা ফেরত দিয়ে দিল। এ কথা শুনার সাথে সাথে বন্ধুর মুখে অন্ধকারের ছেয়ে গেছে। মনে হয় যেন, মাথায় আকাশ বেঙ্গে পড়ল। মাথা নিছু করে নিল। মুখে কোন কথা নেই। থমথমে পরিবেশ। বন্ধুর নীরবতায় আমিও চুপ বাকরুদ্ধ। বুকে চাপা কষ্টের পাহাড় বহন করে সামনের দিকে হেটে যাচ্ছি ২ই জন।
অনেক ক্ষণ পর ভাঙ্গা গলায় বন্ধু কষ্ট মাখা সুরে বলে, কেন চিঠি ফেরত দিল। এ কথা বলতে কি পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে বুঝতে পারতেছি, বন্ধু খুব কষ্ট পাচ্ছে। চুখ মুখ লাল হয়ে গেছে। কথা বলতে পারতেছেনা। কষ্ট পাওয়ারি কথা, স্বপনের মানুষটি খালি হাতে ফেরত দেবে ভাবতে পারেনাই। চিঠির পরিবর্তে চিঠি দেবে। তা নয়, উল্টা চিঠি ফেরত দিল। বন্ধুর সপ্ন বেঙ্গে যাওয়ার কথা ভাবতে পারতেছে না। আমি কর করব। আমি যে পিয়ন। এর থেকে বেশী কিছু নয়। বন্ধু আমাকে বলল ঠিক আছে তুই যে ভাবে হোক আমাদের এক করে দে দুস্ত। আমি বললাম দেখ দুস্ত আমি যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করব, বাকিটা কপালে যা আছে তাই হবে। প্রেম করি নাই ঠিক কিন্তু প্রেমের যাতা কলে পড়ে মরিচ বাটা হয়ে যাচ্ছি।
বন্ধুর পছন্দের মেয়ে, স্বপ্নের নায়িকা, কল্পনার রাজ কুমারির সাথে আমার নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন বেয়াই বেয়ানের জুটি। বন্ধুর প্রেম হোক বা না হোক। আমার প্রমোশন হল, পিয়ন থেকে বেয়াই হলাম। বন্ধুর কষ্টের মাঝে আমার আনন্দের ছোঁয়া। কে দেখে আমার মনে খুশির জোয়ার। আগের মত আর স্কুল ফাঁকি দি না। প্রতিদিন স্কুলে যায়। বেয়াইনদের সাথে আড্ডা আর হাসি তামশা কি যে ভালো লাগে। এভাবে চলতেছে নতুন জীবন। প্রেম কি বুঝি না। প্রেম কি জানি না।
সামনে এসএসসি পরীক্ষা। নয় চয় করে আর পার পাওয়া যাবে না। ভালো করে পড়তে হবে। পড়ার চাপ বেড়ে গেল। প্রাইভেট পড়তে হবে। কার কাছে পড়ি, চিন্তায় পরে গেলাম। আহা-- খবর পেলাম। বেয়াইনেরা বাজারে এক জনের কাছে প্রাইভেট পরে, মাস্টার ভালো। আহা-- ভালো খারাপ জানি না। বেয়াইনেরা পড়ে, আমিও পড়ব। আহা- পরের দিন স্কুলে বিয়াইনদের বললাম তোমার যেখানে প্রাইভেট পড় সে খানে আমি পড়তে পারবো। বেয়াইনেরা বলে কেন পারবে না। আমরা পড়ি, তুমি চাইলে পড়তে পারো। আহা- বেয়াইনের কথা শুনে মনে আনন্দের জোয়ার। কি মজা হবে, এক সাথে প্রাইভেট। মাখও মাখও। ছি ছি ছি। এই সব কি বলতেছি। জাস্ট বিয়াইন। আর কিছু নয়।
পরের দিন প্রাইভেট পড়ার জন্য চলে গেলাম। প্রথম দিন, ছাত্র কিন্তু খারাপ না ভালো ছাত্র হলেও গাদার চেয়ে গাদা। লে হালুয়া, অংক শুরু। প্রাইভেট মাস্টার বলতেছে আমরা খাতায় তুলতেছি। ফাঁকে ফাঁকে বিয়ায়ন্দের সাথে রঙ্গরসের আড্ডা। কি মজা। কলমের কালি নাই। বিয়াইন একটা কল্ম দেন। দূর-ও বিয়াই, কল্ম নাই। দেখো সাদা খাতা নিয়ে বসে আছি। ওয়াও কি মজা। বিয়াইন, কল্ম আছে মাগার কালি শুকিয়ে আছে। হাহাহা। বিয়াই, কল্ম দিয়ে দেন কালি ভরে দেবো। ছি, বিয়াইন ঐ কালি ব্যাবহার করি না। ক্যান বেয়াই, লজ্জা লাগে। মাথা মোটা প্রাইভেট মাস্টার চিৎকার দিয়ে বলে, এখানে আড্ডা দেওয়ার জায়গা না। সুন্দর ভাবে পড়তে হবে। তা না হলে আগামি কাল থেকে আর আসা লাগবে না। বুঝতেছি মাস্টার সাব কঠিন। ফাজলামি বাদ দিয়ে অংক শেষ করে নিলাম। আজকের মত ছুটি।
এক দিন বন্ধুকে বলতেছি, দুস্ত পরীক্ষা সামনে এসে গেছে। প্রাইভেট পড়বিনা? আমি পড়ি, আরও অনেকে পড়ে। শুনলে তুই পড়বি। না দুস্ত, পরিবারের কাজের চাপ। টাকা পয়সা নাই। ইচ্ছা থাকলেও উপায় নাই। প্রাইভেট পড়তে পারবোনা। পারবি দুস্ত পারবি, তুর পছন্দের মেয়ে, স্বপ্নের নায়িকা, কল্পনার রাজ কুমারির পড়ে ওখানে। আহা- দুস্ত কি শুনিল। মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। দুস্ত প্রাইভেট পড়তে রাজি হয়ে গেল।
অনেক দিন পর বন্ধু আবার স্বপ্নের নায়িকা, কল্পনার রাজ কুমারির কে ভালোবাসার মালা গলায় পড়াতে চায়। যে ভাবে হোক তাকে চায়। নতুন কৌশল অবলম্বন করল। স্বপ্নের নায়িকা, কল্পনার রাজ কুমারির পছন্দ নকল করে চলবে বন্ধু আমার রসিয়া। যদি ওর নজরে আসে। আহা-- ঐ মেয়ের পছন্দের কালারের পোশাক বানিয়ে নিল। ওর আশে পাশে ঘুর পাক করে চলতে লাগলো।