এই কেমন নাম!! কেমন গল্প!!! মোবাইল চোর বনাম বুকফাটা কষ্ট (জীবনের ঝরা পাতা)। বাস্তবে অতীত দিনের স্মৃতি, অপমান জনক জীবনের গল্প যাহা মনে পড়লে এখনো শরিরের লোম খাড়া হয়ে যায়। আজ আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করলাম জীবনের পাতা থেকে নেওয়া একটি গল্প।
''মোবাইল চোর''
সবাই স্কুল বয়সে কম বেশী আনন্দদায়ক কোন কিছু বন্ধুদের সাথে মিলেমিশে করতে ভালোবাসে। ঠিক তেমনি আনন্দ দায়ক রমজানের ঈদকে সামনে রেখে বন্ধুদের সাথে ঈদকার্ড এর বাসাই/দোকান দেওয়ার আয়োজন করলাম। কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। খুশি রাখার জায়গা নাই। ঈদের আগেই ঈদ।
এই সুবাদের ঈদ কার্ড কেনার জন্য বন্ধুরা সবাই মিলে নিজ শহরে গেলাম। বাংলা সিনেমার একটি জনপ্রিয় গান আছে- ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে। আরে লাল লাল নীল নীল বাত্তি দেইখ্যা নয়ন জুড়াইছে। ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে.। জীবনের প্রথম তাই আনন্দে আত্মহারা কিন্তু অলি গলি রাস্তা ঘাট এবংকি মানুষের সাথে চলা পেরা একেবারে নতুন। এক কথায় -গাইয়া ভূত। বন্ধুদের পথ অনুসরণ করে পিচে পিচে হাটি। দিনের আলো শেষ হয়ে গেল, রাত শুরু। নানা রঙ্গের লাইটের আলোতে মনের ভীতর আনন্দের ডেউ খেলা করে যাচ্ছে। এর মাঝে রাতে কোথায় থাকব বন্ধুদের মাঝে জল্পনা কল্পনা চলতেছে। এক বন্ধু বলল, চল আমার খালাতো ভাইয়ের কাছে যায়। ওখানে রাত থাকার কোন ব্যবস্থা হবে। যে কথা সেই কাজ। পিচে পিচে চলতেছি। অবশেষে বন্ধুর খালাতো ভাইয়ে কর্মস্থলে হাজির। আমাদেরকে এক সঙ্গে দেখে মহাখুশি। তার খুশিতে আমরাও খুশী।
খালাতো ভাইয়ের আবদার চল সবাই মিলে হোটলে, খাওয়ার টেবিলে বসে গল্প করি। এই বলে বাহীর হয়ে হাঁটা শুরু। গল্প গোজবে হাঁটতে হাঁটতে রাত ১২টা।পেটে খিদা আর ভালো লাগতেছে না। কিছু খাওয়া চাড় আর উপায় নেই। বন্ধুরা সবাই বলতেছে চল এইবার খাওয়ার হোটলে। ঐ সামনে দেখা যায় চালাদিয়া হোটলে।হাহাহা। নাম শুনে হাসাহাসি। চালাদিয়া হোটলে খাওয়ার পর্ব শেষ করলাম। হোটেল থেকে বাহীর হয়ে সবাই মিলে রাস্তায় রাস্তায় হাটতেছি আর গল্প করতেছি। ভালো লাগতেছে নতুন শহরে অলি গলি। এইভাবে রাত ৪টা। চুখে ঘুম ঘুম ভাব। আর ভালো লাগতেছে না। সবাই ভাইয়ের কর্মস্থল কারখানায় গেলামা। খাটপালং কিছু নাই, ক্যামনে ঘুমায়। মা বাবা ও বড় জনদের কথা মনে পড়ল। আমাদের মানুষ করার জন্য কথ কষ্ট করে।
এখন বুঝতেছি শহর কি জিনিস। কারখানেতে আরো ৩-৪ জন লোক আছে। তাদের সাথে আমাদেরও ঘুমাতে হবে। যাইহোক, চুখে ঘুম কিছু দেখতেছি না। শুতে পারলে হল। কোন মতে রাত পার হলে সকাল সমস্যা শেষ। এই বলে শুয়ে পরলাম। ঘুম থেকে সকাল ১০টায় ওঠলাম। সবাই নাস্তা করার জন্য হোটলে গেলাম।নাস্তা শেষ করে খালাতো ভাইকে বললাম। ভাই তুকে অনেক কষ্ট দিলাম এইবার আমাদের যেতে হবে। খালাত ভাই আমাদের বিদায় দিয়ে বলল ঠিক আছে যা। আমিও যাচ্ছি তাহলে। দেখে শুনে ঈদকার্ড কিনিস। আল্লাহ্ হাপেয।
আমরা ঈদকার্ড কিনতে দোকানে গেলাম। বন্ধুরা নিজ নিজ পছন্দে ঈদকার্ড কেনা কাটা শেষ করলাম। এমন সময় বন্ধুর মোবাইলে মোবাইলে রিংটোন । বন্ধু বলতেছে, খালাতো ভাইয়ের কল। বন্ধু কল রিসিভ করে কথা শেষ করল। বন্ধুর খালত ভাইয়ের সাথে কি কথা বলল জানি না। সবাইকে বলতেছে চল, খালাত ভাইয়ের কারখানাতে। অভাগ হয়ে, আমরা বললাম কেন? ও বলল ওখানে গেলে জানতে পারব। মনে চিন্তা ধরে গেলো, কি হইছে। বুঝতেছিনা। কি আর করা বন্ধুর ভাইয়ের কথা রাখতে আবার কারখানার দিকে চললাম। যাওয়ার সময় বন্ধু কিছু বলতেছে না। চুখে মুখে চিন্তার ভাব। এই দেখে আমাদেরও ভালো লাগতেছেনা। কারখানানাতে আসলাম। কেউ কিছু বলতেছেনা। সবাই চুপচাপ, একে অপরের দিকে দেখে কিন্তু কেউ কিছু বলতেছেনা।থমথমে অবস্থা বিরাজ। মাথা নষ্ট, বন্ধু খালাত ভাইকে বলতেছে কি হইছে? কেন আমাদের আসতে বললি। ভাই বলল এইখানে মোবাইল চুরি হইছে তাই তুদের আসতে বলছি। আচার্য, নিদারুণ কষ্ট। এই কথা শুনে আমরা সবাই চুর হয়ে গেলাম, খালাত ভাইও লজ্জায় আছে। কষ্টের কারণ একটাই, রাতে আমাদের থাকতে দিল। এর মাঝে মোবাইল চুরি হয়ে গেলো। কে করল এই কাজ। যার হারাইছে সে জানে, আর যে নিল সেই জানে। আল্লাহ ভালো জানেন। কি আর করা , সম্মানের মালিক আল্লাহ।
আমরা সবাই নির্দোষ। খালাত ভাই বলল, ঠিক আছে তুরা আজ থাক। রাতে যার মোবাইল হারাইছে সে ইটা পড়া দেবে। (কুসংস্কার ) ইটা পড়া দিলে নাকি চুর ধরা পরবে (চোর ধরার মন্ত্র) প্রথম শুনলাম। তাই তুদের কে আসতে বললাম, কিছু মনে করিস না। খালাত ভাইয়ের সম্মান তার সাথে আমাদের সম্মমান বাঁচাতে থাকতে হল। সবাই ইটা পড়ার অপেক্ষায় আছি।
---- --- বাকী অংশ আসিতেছে।