স্বাগতম

সবার জন্য উন্মুক্ত পেইজ ভিজিট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। *** শিক্ষার কোন বয়স নাই, জানার কোন শেষ নাই। *** বিঃদ্র ( যে সকল ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর লেখা কোন অনুমতি ছাড়া কপি করে এখানে পোষ্ট করেছি, যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে দয়া করে জানাবেন। E-mail: nchafa10@gmail.com, ভালো লাগলে আবার আসবেন।***ধন্যবাদ***

মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন

মাটি বালি ইট কনক্রিট পাথরের ব্যবসা শুরু করার আগে কিছু প্রাথমিক হিসাব নিকাশ এর ধারনা রাখতে হবে। অন্যথায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। ক্ষতির হাত থেকে বাচার জন্য মাটি বালি ও ইট কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার সহজ পদ্ধতি জেনে নিন। যারা ভালো পারেন, ভালো বুঝেন তাদের কাছে আবেদন। নিন্মের আলোচনায় কোন রকম ভুল ধরা পড়লে, সংশোধন করার জন্য হেল্প করবেন। সবার জন্য উপকার হবে।

আর নতুদের জন্য নিন্মে মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার সহজ পদ্ধতি দেওয়া হল।
mati mapar sutro
উপরের ছবিটি দেখুন। সহজে বুঝার জন্য দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা আকার একটি মাপের পদ্ধতি দেওয়া আছে। 

আপনিও ঠিক মাটি কাটার হিসাব, বালির হিসাব, কনক্রিট পাথরের সিএফটি জানার জন্য উপরের ছবির মত  দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতার মাপ করে নিবেন। বালি কিভাবে মাপা হয়? বালি হিসাব করার সূত্র দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা ÷ ১০০০ = সিএফটি । উচ্চতা বা গভীরতা যেকোনো একটা হবে। 

মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার জম্য নিন্মের সূত্র ব্যাবহার করা যাবে। দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা ÷ ১০০০ = সিএফটি 

(গ্রামের মানুষ বা শ্রমিকরা এক হাজার ঘনফুট মাটিকে বলে এক হাজার মাটি। অতএব, তাদের ভাষায় দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা মেপে গুণন করে যে ভাগফল পাওয়া যাবে তাকে ১০০০ দিয়ে ভাগ করে দিলে কত হাজার মাটি আছে তাহার হিসাব জানা যাবে) 
 
আমরা সাধারণত মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার জন্য ফুট হিসাব করি। মাটি হিসাব হয় ১ বা এতো হাজার মাটি বলে থাকি। আবার পাথরের ক্ষেতে আমরা ফুট কে সিএফটি বলে থাকি। কারণ ফুটের সাথে সিএফটি সংখ্যার মিল। এই জন্য আমরা সিএফটি বলে থাকি।  যাহোক, আপনি ১ সিএফটি বা ফুট কাঠ কিভাবে বাহির করবেন? cft বা ফুট বের করার নিয়ম জানতে হলে আপনাকে কাঠ মাপার নিয়ম ও সূত্র জানতে হবে। কাঠ মাপার সূত্র । 

এখন আসুন, কাগজে কলমে মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার সহজ পদ্ধতি জানার চেষ্টা করি।
প্রথমে আপনি একটি লম্বা ফিতা নিন এবং উপরের ছবিটির মত করে বালি, মাটি ও কনক্রিট বা পাথর এর সমতল স্তূপটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা মেপে নিন। যেমনঃ উপরের ছবিতে দৈর্ঘ্য ২০ ফুট × প্রস্থ ১৫ ফুট ×  উচ্চতা ৫ ফুট দেওয়া আছে। 

তারপর দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা গুণ করুন এবং ঐ গুণফলকে ১০০০ দ্বারা ভাগ করুন। তাহলে আপনি পেয়ে যাবেন কত সিএফটি মাটি, বালি বা কনক্রিট বা পাথর রয়েছে। এখানে ১০০০ হল মাটি মাপার সূত্র। সূত্র: দৈর্ঘ্য × প্রস্থ × উচ্চতা ÷ ১০০০ = সিএফটি
 
যেমন: যায়গাটির দৈর্ঘ্য ২০ ফুট, প্রস্থ ১৫ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট । তাহলে ফলাফল আসবে ,
২০×১৫×৫=১,৫০০ বর্গফুট । 
এবার ১,৫০০ বর্গ ফুটকে ১,০০০ দিয়ে ভাগ করতে হবে। যেমনঃ ১,৫০০ ÷ ১,০০০ = ১.৫০।

এখানে ভাগফল ১.৫০ পরিমাণ মানে সিএফটি মাটি বালি বা পাথর রয়েছে। 

গ্রামের মানুষ এই সিএফটিকে মাটির বেলায় হাজার বলে অর্থাৎ ভাগ করার পর যে ফলাফল আসে তাকে এত হাজার মাটি রয়েছে বলে এবং বলি। মনে রাখবেন, মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার  ক্ষেত্রে সিএফটি বা হাজার বা ফুট একই বিষয়। কুয়া মাটির হিসাব ইত্যাদি। 

আর ভালোভাবে জানার জন্য মাটি মাপার সুত্র সম্পর্কে নিচের নিয়মাবলী অনুসরণ করবেন।
দৈর্ঘ্য x প্রস্থ = Square feet (SFT)
দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x গভীরতা = Cubic feet( CFT

SFT ও CFT এর অর্থ মাঝে মাঝে আমরা গুলিয়ে ফেলি। Cubic feet ( CFTএর বাংলা অর্থ ঘনফুট । Square feet (SFT) এর বাংলা অর্থ বর্গফুট।


এখন দেখুন নিয়মাবলী ১

যদি,  দৈর্ঘ্য-প্রস্থ এবং গভীরতা সবগুলো একই এককে হয় অর্থাৎ মাপ গুলো সব ফুটে থাকে এবং ইঞ্চিতে না থাকে তাহলে হিসাব হবে সুত্রঃ দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x গভীরতা = সিএফটি

(৯'x০'') X (৪'x০'')  X (২' x০") = ৭২

(৯' X ৪' X ২') = ৭২ সি.এফ.টি


নিয়মাবলী ২

যদি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতার কোন একটি একক ইঞ্চিতে পাওয়া যায় অর্থাৎ মাপটির দুটি একক ফুটে একটি ইঞ্চিতে তখন হিসাব হবে দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x গভীরতা ÷ ১২ = সিএফটি

(৯'x ০'') X (৪'x ০'')  X (২৫") ÷ ১২ = ৭৫

{(৯' X ৪' X ২৫") ÷ ১২} = ৭৫ সিএফটি


নিয়মাবলী ৩

যদি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতার  দুইটি একক ইঞ্চিতে পাওয়া যায় অর্থাৎ মাপটির একটি একক ফুটে বাকি দুইটি ইঞ্চিতে তখন হিসাব হবে দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x গভীরতা ÷ ১৪৪ = সিএফটি

[{(৯'x ০'') X ৫০'' X ২৫"} ÷ ১৪৪] = ৭৮

{(৯' X ৫০'' X ২৫") ÷ ১৪৪} = ৭৮.১২ সিএফটি


নিয়মাবলী ৪

যদি দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং গভীরতার তিনটি একক ইঞ্চিতে পাওয়া যায় অর্থাৎ মাফটির তিনটিই ইঞ্চিতে তখন হিসাব হবে দৈর্ঘ্য x প্রস্থ x গভীরতা ÷ ১৭২৮ = সিএফটি

{(৯৮'' X ৫০'' X ২৫"} ÷ ১৭২৮} = ৭১

{(৯৮''X ৫০''X২৫")÷১৭২৮} = ৭০.৮৯ সিএফটি


গ্রামের মানুষ এই সিএফটিকে মাটির বেলায় হাজার বলে অর্থাৎ ভাগ করার পর যে ফলাফল আসে তাকে এত হাজার মাটি রয়েছে বলে এবং বলি। মনে রাখবেন, মাটি বালি ও কনক্রিট পাথরের সিএফটি মাপার  ক্ষেত্রে সিএফটি বা হাজার বা ফুট একই বিষয়। কুয়া মাটির হিসাব ইত্যাদি।  


এবার আসুন অংক করি,  সমস্যা – ১


মনে করি ১১৪ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৪০ ফুট প্রস্থের একটি পুকুরকে ৬ ফুট গভীর করতে হবে। তাহলে কত ঘনফুট মাটি কাটতে হবে। উল্লেখ্য, উক্ত পুকুরের ঢাল হবে ১ অনুপাত ১.৫ অর্থ্যাৎ গভীরতা অনুপাত ঢাল = ১ অনুপাত ১.৫। প্রতি হাজার মাটি কাটতে ১০০০/- টাকা লাগলে পুকুরটি খনন করতে মোট কত টাকা খরচ হবে?

সমাধানঃ সম্পূর্ণ পুকুরটি আয়তাকারে খনন করলে মাটি কাটতে হতো-

১১৪ × ৪০ × ৬ = ২৭৩৬০ ঘনফুট

কিন্তু যখন ঢাল (পাহাড় নিচের অংশ) রাখা হচ্ছে তখন এই পরিমাণ মাটি খননের দরকার হচ্ছে না, কারণ ঢাল যে পর্যন্ত বিস্তৃত সে পর্যন্ত আয়তাকারে মাটি খনন করলে যে পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হতো ঢাল থাকার কারণে তার অর্ধেক পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হবে। অর্থ্যাৎ ঢাল থাকার কারণে ২৭৩৬০ ঘনফুট মাটি কাটার দরকার হবে না। ২৭৩৬০ প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ এর চেয়ে কম হবে।

যখন ঢাল ১অনুপাত ১.৫ তখন ঢালের নীচের প্রান্ত পুকুরের পাড় থেকে ৯ ফুট দূরে গিয়ে পুকুরের তলায় মিশবে (কারণ গভীরতা ৬ ফুটের দেড়গুণ বিস্তৃত হবে ঢাল)। অর্থ্যাৎ দুই পাশ থেকে ৯ + ৯ = ১৮ ফুট জায়গা কমে যাবে। সুতরাং পুকুরের কেন্দ্রের পরিমাপ হবে- 

দৈর্ঘ্য = ১১৪ – ১৮ = ৯৬ ফুট
প্রস্থ = ৪০ – ১৮ = ২২ ফুট এবং
গভীরতা = ৬ ফুট

আয়তন হবে = ৯৬ × ২২ × ৬ = ১২৬৭২ ঘনফুট

অতএব, প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ/আয়তন হবে (২৭৩৬০ + ১২৬৭২)/২ = ২০০১৬ ঘনফুট

এখন এই হিসাব সঠিক আছে কিনা অন্য পদ্ধতিতে যাচাই করে দেখা যাক-
এই পদ্ধতিতে প্রথমে ঢাল বাদে পুকুরের ভিতরের অংশের মাটি খননের পরিমাপ বের করতে হবে।

উপরের হিসাব থেকে আমরা পাই সেই পরিমাণ হলো = ১২৬৭২ ঘনফুট — (১)

এখন আমরা যে অংশ জুড়ে ঢাল বিস্তৃত সে অংশের মাটি খননের হিসাব বের করব। ঢালকে আমরা একটি বড় আকারের ত্রিভূজ ধরতে পারি যার ভূমির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট এবং উচ্চতা ৬ ফুট। এবং উক্ত ত্রিভূজের পুরুত্বও আছে। আমরা সাধারণভাবে ছবিতে যে ত্রিভূজ আঁকি তার কিন্তু পুরুত্ব থাকেনা। ত্রিভূজের আয়তন বের করতে গিয়ে আমরা সেজন্য আয়তনকে বলে থাকি ক্ষেত্রফল। কারণ, আয়তন হতে গেলে তিনটি মাত্রা অবশ্যই থাকতে হবে, যথাঃ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, এবং বেধ বা পুরুত্ব। কিন্তু ছবির ত্রিভূজের কেবল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকে, বেধ থাকে না। ছবির ত্রিভূজের ক্ষেত্রে যে পুরুত্ব থাকে তাকে তল ধরা হয়। তল এমনি একটি পরিমাপ যার সাথে যেকোন একককে গুণ করে ঐ এককে ফলাফল বের করা যায়। অর্থ্যাৎ তাকে ইঞ্চি দ্বারা গুণ করলে ইঞ্চি এককে প্রকাশ করা যায়, আবার ফুট দ্বারা গুণ করে ফুট এককে প্রকাশ করা যায়।

সুতরাং আমরা যদি ঢালরূপ ত্রিভূজের একটি তলের আয়তন/ক্ষেত্রফল বের করতে পারি এবং সেটাকে তার পুরুত্ব দ্বারা গুণ করি তাহলে পুকুরের সেই পাড়ের/দিকের প্রকৃত আয়তন বের করতে পারি। এখন দেখা যাক ঢালের উপরি তলের ক্ষেত্রফল কত যার ভূমি ৯ ফুট এবং উচ্চতা ৬ ফুট। ত্রিভূজের ক্ষেত্রফলের সূত্র বসিয়ে পাই ১/২ × ৯ × ৬ = ২৭ বর্গফুট।

তাহলে পুকুরের দৈর্ঘ্য বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ২৭ × ১০৫ ঘনফুট বা ৫৬৭০ ঘনফুট — (২)
(দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ওভারল্যাপ করায় প্রতিটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়টি) প্রকৃত পরিমাপের চেয়ে ৯ ফুট কম হবে, কারণ ঢালের অনুপাত থেকে এটা বুঝা যাচ্ছে যে, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়ে ৯ ফুট এলাকা জুড়ে পরস্পরকে ওভারল্যাপ করে আছে।

অন্যদিকে, পুকুরের প্রস্থ বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ২৭ × ৩১ ঘনফুট বা ১৬৭৪ ঘনফুট — (৩)

সুতরাং (১), (২), ও (৩) নং উপাত্ত থেকে পাওয়া যায় ১২৬৭২ + ৫৬৭০ + ১৬৭৪ = ২০০১৬ ঘনফুট মাটি।

শ্রমিকরা এক হাজার ঘনফুট মাটিকে বলে এক হাজার মাটি। অতএব, তাদের ভাষায় পুকুরটি খনন করতে ২০ হাজার ১৬ মাটি বা ২০.০১৬ হাজার মাটি কাটতে হবে। সুতরাং পুকুরটি খনন করতে মোট ১০০০ × ২০.০১৬ = ২০০১৬ টাকা খরচ হবে (প্রতি হাজার মাটি ১০০০ টাকা হিসেবে)।

সমস্যা – ২

মনে করি ১৫৪ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৮০ ফুট প্রস্থের একটি পুকুরটি ৫ ফুট গভীর করতে হবে। তাহলে কত ঘনফুট মাটি কাটতে হবে। উল্লেখ্য, উক্ত পুকুরের ঢাল হবে ১ ঃ ১ অর্থ্যাৎ গভীরতা ঃ ঢাল = ১ ঃ ১। প্রতি হাজার মাটি কাটতে ১১৫০/- টাকা লাগলে পুকুরটি খনন করতে মোট কত টাকা খরচ হবে?

সমাধানঃ সম্পূর্ণ পুকুরটি আয়তাকারে খনন করলে মাটি কাটতে হতো-

১৫৪ × ৮০ × ৫ = ৬১৬০০ ঘনফুট

কিন্তু যখন ঢাল রাখা হচ্ছে তখন এই পরিমাণ মাটি খননের দরকার হচ্ছে না, কারণ ঢাল যে পর্যন্ত বিস্তৃত সে পর্যন্ত আয়তাকারে মাটি খনন করলে যে পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হতো ঢাল থাকার কারণে তার অর্ধেক পরিমাণ মাটি কাটার প্রয়োজন হবে। অর্থ্যাৎ ঢাল থাকার কারণে ৬১৬০০ ঘনফুট মাটি কাটার দরকার হবে না। প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ এর চেয়ে কম হবে।

যখন ঢাল ১ ঃ ১ তখন ঢালের নীচের প্রান্ত পুকুরের পাড় থেকে ৫ ফুট দূরে গিয়ে পুকুরের তলায় মিশবে (কারণ গভীরতা ৫ ফুটের সম পরিমাণ বিস্তৃত হবে ঢাল)। অর্থ্যাৎ দুই পাশ থেকে ৫ + ৫ = ১০ ফুট জায়গা কমে যাবে। সুতরাং পুকুরের কেন্দ্রের পরিমাপ হবে-

দৈর্ঘ্য = ১৫৪ – ১০ = ১৪৪ ফুট
প্রস্থ = ৮০ – ১০ = ৭০ ফুট এবং
গভীরতা = ৫ ফুট

যার আয়তন হবে = ১৪৪ × ৭০ × ৫ = ৫০৪০০ ঘনফুট

অতএব, প্রকৃত মাটি খননের পরিমাণ/আয়তন হবে (৬১৬০০ + ৫০৪০০)/২ = ৫৬০০০ ঘনফুট

এখন এই হিসাব সঠিক আছে কিনা অন্য পদ্ধতিতে যাচাই করে দেখা যাক-

এই পদ্ধতিতে প্রথমে ঢাল বাদে পুকুরের ভিতরের অংশের মাটি খননের পরিমাপ বের করতে হবে।

উপরের হিসাব থেকে আমরা পাই সেই পরিমাণ হলো = ৫০৪০০ ঘনফুট — (১)

এখন আমরা যে অংশ জুড়ে ঢাল বিস্তৃত সে অংশের মাটি খননের হিসাব বের করব। ঢালকে আমরা একটি বড় আকারের ত্রিভূজ ধরতে পারি যার ভূমির দৈর্ঘ্য ৫ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট। এবং উক্ত ত্রিভূজের পুরুত্বও আছে। আমরা সাধারণভাবে ছবিতে যে ত্রিভূজ আঁকি তার কিন্তু পুরুত্ব থাকেনা। ত্রিভূজের আয়তন বের করতে গিয়ে আমরা সেজন্য আয়তনকে বলে থাকি ক্ষেত্রফল। কারণ, আয়তন হতে গেলে তিনটি মাত্রা অবশ্যই থাকতে হবে, যথাঃ দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, এবং বেধ বা পুরুত্ব। কিন্তু ছবির ত্রিভূজের কেবল দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ থাকে, বেধ থাকে না। ছবির ত্রিভূজের ক্ষেত্রে যে পুরুত্ব থাকে তাকে তল ধরা হয়। তল এমনি একটি পরিমাপ যার সাথে যেকোন একককে গুণ করে ঐ এককে ফলাফল বের করা যায়। অর্থ্যাৎ তাকে ইঞ্চি দ্বারা গুণ করলে ইঞ্চি এককে প্রকাশ করা যায়, আবার ফুট দ্বারা গুণ করে ফুট এককে প্রকাশ করা যায়।

সুতরাং আমরা যদি ঢালরূপ ত্রিভূজের একটি তলের আয়তন/ক্ষেত্রফল বের করতে পারি এবং সেটাকে তার পুরুত্ব (দৈর্ঘ্য) দ্বারা গুণ করি তাহলে পুকুরের সেই পাড়ের/দিকের প্রকৃত আয়তন বের করতে পারি। এখন দেখা যাক ঢালের উপরি তলের ক্ষেত্রফল কত যার ভূমি ৫ ফুট এবং উচ্চতা ৫ ফুট। ত্রিভূজের ক্ষেত্রফলের সূত্র বসিয়ে পাই ১/২ × ৫ × ৫ = ১২.৫ বর্গফুট।

তাহলে পুকুরের দৈর্ঘ্য বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ১২.৫ × ১৪৯ ঘনফুট বা ৩৭২৫ ঘনফুট — (২)
(দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ ওভারল্যাপ করায় প্রতিটি মাত্রা (দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়টি) প্রকৃত পরিমাপের চেয়ে ৫ ফুট কম হবে, কারণ ঢালের অনুপাত থেকে এটা বুঝা যাচ্ছে যে, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ উভয়ে ৫ ফুট এলাকা জুড়ে পরস্পরকে ওভারল্যাপ করে আছে।

অন্যদিকে, পুকুরের প্রস্থ বরাবর ২ টি ঢালের আয়তন হবে = ২ × ১২.৫ × ৭৫ ঘনফুট বা ১৮৭৫ ঘনফুট — (৩)

সুতরাং (১), (২), ও (৩) নং উপাত্ত থেকে পাওয়া যায় ৫০৪০০ + ৩৭২৫ + ১৮৭৫ = ৫৬০০০ ঘনফুট মাটি।

শ্রমিকরা এক হাজার ঘনফুট মাটিকে বলে এক হাজার মাটি। অতএব, তাদের ভাষায় পুকুরটি খনন করতে ৫৬ হাজার মাটি কাটতে হবে। সুতরাং পুকুরটি খনন করতে মোট ১১৫০ × ৫৬ = ৬৪৪০০ টাকা খরচ হবে (প্রতি হাজার মাটি ১১৫০ টাকা হিসেবে)।

পূর্বে খননকৃত পুকুর বা জলাশয় পুনঃখননের ক্ষেত্রে পূর্বে কৃত কাজের পরিমাণ (প্রি ওয়ার্ক এস্টিমেট) খনন শুরুর আগেই হিসাব করে নিতে হবে। পুনঃখননের পর মোট গভীরতা যেন হিসাব করা যায় তার জন্য স্থির কোন চিহ্ন বা প্লাটফর্ম থেকে হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে। খনন কাজ শেষ হলে খননকৃত জলাশয়ের তলা থেকে সব জায়গায় পানির গভীরতা সমান থাকলে বুঝতে হবে খননের পরিমাণ সঠিক আছে। পুনঃখনন শুরুর আগে জলাশয়ের তলা উচু নিচু থাকলে গভীরতা মাপার ক্ষেত্রে গড় মান ধরতে হবে। 

সমাধান সংগৃহীত সূত্র ফার্মসএন্ডফার্মার২৪/জেডএইচ

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে একটিভ থাকুন

১লা মে দিবস / শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন

১লা মে দিবসের ছবি ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। ১লা মে মহান মে দিবস। ১লা মে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ স...