সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন মানুষকে দিয়েছে জ্ঞান বুদ্ধি। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন এর সৃষ্টির ব্যাবহার করে মানুষও সৃষ্টি করে যাচ্ছে নিত্য নতুন জিনিস।(আল্লাহ সরব শক্তিমান) কিন্তু আল্লাহর নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় না করে নিজেদের জ্ঞান বুদ্ধি দিয়ে একে অন্যের ক্ষতি করে যাচ্ছি। কার চেয়ে কে বেশী শক্তি শালি, কার চেয়ে কে বেশী ধনি হওয়া যায় এই প্রতিযোগিতা নিয়ে বেস্ত। দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী এটা ভুলে আছি। ভুলে যাওয়ার কারনে শয়তানের মত নানা রকম কু-কর্ম যাচ্ছি। বিশেষ করে টাকা আর সম্পদের পিছে দুরাচ্ছে। যারা শক্তি শালি তারা এতীমের হক মেরে বা অন্যদের ঠকিয়ে জমি জমা দখল, এমন কি জাল দলিল করে ভোগ দখল করে খাচ্ছে। বর্তমানে শিক্ষার হার অনেক বেশী জাল ধলিল দেখায়ে জমি দখল করে খাওয়া অসম্ভব। আপনি যদি পড়তে পারেন তাহলে আপনি ও জাল দলিল চিনে নিতে পারবেন। তার আগে বিভিন্ন প্রকার দলিল সম্পর্কে জেনে নিন- যেমনঃ সাফ কবলা, দান-পত্র দলিল, হেবা দলিল, হেবা বিল এওয়াজ, এওয়াজ দলিল, বণ্টননামা দলিল, অসিয়তনামা দলিল, উইল দলিল, না-দাবি দলিল, দখলনামা দলিল, ডিক্রি দলিল, আদালতযোগে সাফকবলা দলিল, বায়নাপত্র দলিল ইত্যাদি।
জাল দলিল চেনার কিছু উপায়ঃ
মূল মালিক শনাক্ত করে, স্বাক্ষর যাচাই কারা,তারিখ যাচাই করা, মালিকানা যাচাই করা, দলিল লেখক যাচাই করা, দলিলের সিল-স্ট্যাম্প যাচাই করা, নামজারি যাচাই করা, আমমোক্তারনামা ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ভলিউডেমর তথ্য যাচাই করা।
জাল দলিল সনাক্ত করার উপায় বিস্তারিঃ
১. ভলিউডেমর তথ্য/ দলিল তল্লাশি বা দলিল অনুসন্ধানঃ
সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের প্রকৃতি অনুযায়ী চারটি রেজিস্ট্রার বা ভলিউমে লেখা হয়ে থাকে। কোনো দলিল নিয়ে সন্দেহ হলে রেজিস্ট্রি অফিসে সংরক্ষণ করা দলিলের সাল মিলিয়ে দেখতে হবে। এজন্য নির্দিষ্টভাবে দরখাস্ত করতে হবে। এতে দলিলটির যাবতীয় তথ্য দিতে হবে।
২. স্বাক্ষর যাচাই:
অনেক সময় স্বাক্ষর জালিয়াতি করে দলিলদাতা বা গ্রহীতার সাজা হয়। এক্ষেত্রে স্বাক্ষর বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে স্বাক্ষরের সত্যতা যাচাই করিয়ে নেয়া যেতে পারে। এছাড়া ভূমি অফিস থেকে বিভিন্ন সিল পরীক্ষা করেও জালিয়াতি নির্ণয় করা যায়।
খেয়াল রাখতে হবে, অনেক আগের দলিলে আগের চিহ্নিত কিছু সিল ব্যবহারই থাকে। আগের দলিল কিন্তু সিল যদি নতুন হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, দলিলটি জাল হতে পারে। একই সঙ্গে তারিখটিও ভালোভাবে যাচাই করতে হবে। দলিল রেজিস্ট্রির তারিখ কোনো সরকারি বন্ধের দিন থাকলে সন্দেহের অবকাশ থাকবে। অনেক সময় অর্পিত সম্পত্তি বা মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি জীবিত দেখিয়ে জাল করা হয়।
৩. মূল মালিক শনাক্ত:
এক জমির একাধিক মালিকের নামে করা থাকলে ধরে নিতে হবে দলিলটি জাল হতে পারে। এক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে মূল মালিক কে, তা নির্ণয় করতে হবে।
৪. নামজারি:
সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে জমির মিউটেশন বা নামজারি সম্পর্কে খোঁজ নিতে হবে। নামজারিতে ধারাবাহিকতা ঠিক আছে কি না, সেটা সুচারুভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যদি দেখা যায়, সিএস জরিপের সঙ্গে বিক্রেতার খতিয়ানের কোনো গরমিল আছে, তাহলে বুঝতে হবে, কোনো জটিলতা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, জরিপ খতিয়ানে জমির পরিমাণ পরবর্তী সময়ে যতবার বিক্রি হয়েছে, তার সঙ্গে জমির পরিমাণ মিল আছে কি না, তা যাচাই করে দেখা। দাগ নম্বর, ঠিকানা এসব ঠিক আছে কি না, এসব যাচাই করতে হবে।
৫. আমমোক্তারনামা:
সম্প্রতি কোনো আমমোক্তারনামা দলিল থাকলে তাতে উভয় পক্ষের ছবি ব্যবহার হয়েছে কি না যাচাই করতে হবে।
৬. তারিখ যাচাই:
কোনো দান করা জমি হলে দলিলে সম্পাদনের তারিখ দেখে কবে জমিতে গ্রহীতা দখলে গেছে তা যাচাই করতে হবে। দলিলটি রেজিস্ট্রি করা কি না এবং দলিলদাতার সঙ্গে গ্রহীতার সম্পর্ক কী, তা যাচাই করতে হবে।
৭. লেখক যাচাই:
সম্প্রতি সম্পন্ন হওয়া কোনো বিক্রীত দলিলের দলিল লেখকের নাম ঠিকানা জেনে সরেজমিন কথা বলে নেয়া দরকার।
৮. মালিকানা যাচাই:
জমির স্বত্ব কী বা মালিকানা যাচাই করতে হবে। বিক্রেতার কাছ থেকে সব দলিল, বিশেষ করে ভায়া দলিল চেয়ে নিতে হবে। সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে জানতে হবে সব দলিলের ক্রমিক নম্বর, দলিল নম্বর ঠিক আছে কি না।
৯. সিল-স্ট্যাম্প যাচাই:
দলিল সম্পাদনের সময় ব্যবহৃত স্ট্যাম্পের পেছনে কোন ভেন্ডার থেকে স্ট্যাম্প কেনা হয়েছে এবং কার নামে কেনা হয়েছে খেয়াল রাখুন। প্রতিটি স্ট্যাম্পের পেছনে একটি ক্রমিক নম্বর উল্লেখ থাকে। এ নম্বরটি ঠিক আছে কি না, প্রয়োজনে স্ট্যাম্প বিক্রেতার সঙ্গে দেখা করে যাচাই করে নিন।
সংগৃহীত- somoynews.tv।