তেঁতুলের নাম শুনলেই জিভে জল আসে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। টক তেঁতুল মুখে দিলে আমাদের যে ভিন্ন এক অনুভূতি হয় তা নিশ্চয়ই বলতে হবে না। আমাদের অনেকেরই ধারণা তেঁতুল খেলে রক্ত পানি হয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে তেঁতুল কোনোভাবেই আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে খুব উপকারী। তেঁতুল বসন্ত-কালের ফল হলেও বছরের সব সময়ই পাওয়া যায়।
তেঁতুল দেহে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগীদের জন্য খুব উপকারী
রক্তের কোলেস্টেরল কমায়
শরীরের মেদ কমাতেও কাজ করে তেঁতুল
পেটে গ্যাস, হজম সমস্যা, হাত-পা জ্বালায় তেঁতুলের শরবত খুব উপকারী
খিদে বাড়ায়
গর্ভাবস্থায় বমি বমি বমি ভাব দূর করে
মুখের লালা তৈরি হয়
তেঁতুল পাতার ভেষজ চা ম্যালেরিয়া জ্বর কমানোর জন্য ব্যবহৃত হয়
শিশুদের পেটের কৃমিনাশক
তেঁতুল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সাহায্য করে
পাইলস্ চিকিত্সার জন্য ব্যবহার করা হয়
মুখে ঘাঁ ও ত্বকের প্রদাহ সারাতে সাহায্য করে
তেঁতুল রক্ত পরিস্কার করে
বাত বা জয়েন্টগুলোতে ব্যথা কমায়
ভিটামিন সি-এর বড় উৎস
পুরনো তেঁতুল খেলে কাশি সারে
পাকা তেঁতুলে খনিজ পদার্থ অন্য যে কোনো ফলের চেয়ে অনেক বেশি
খাদ্যশক্তিও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালসিয়ামের পরিমাণ সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ১৭ গুণ বেশি
আর আয়রনের পরিমাণ নারকেল ছাড়া সব ফলের চেয়ে ৫ থেকে ২০ গুণ বেশি।
প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা তেঁতুলের পুষ্টিমান:
ক্যালরি ২৩৯, আমিষ বা প্রোটিন – ২.৮, শর্করা – ৬২.৫ গ্রাম, ফাইবার – ৫.১ গ্রাম, চর্বি – ০.৬ গ্রাম, ফসফরাস - ১১৩ মিলিগ্রাম, লৌহ – ২.৮২ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম - ৭৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি - ২ মিলিগ্রাম, মিনারেল বা খনিজ পদার্থ ২.৯ গ্রাম, ভিটামিন বি – ০.৩৪ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম - ৬২৮ মি:লি, ভিটামিন ই – ০.১ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৬০ মাইক্রোগ্রাম, সেলেনিয়াম – ১.৩ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম - ২৮ মিলিগ্রাম, দস্তা – ০.১২ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম - ৯২ মিলিগ্রাম, এবং তামা – ০,৮৬ মিলিগ্রাম।
পাকা তেঁতুল কফ ও বায়ুনাশক, খিদে বাড়ায় ও উষ্ণবীর্য হয়। তেঁতুল গাছের ছাল, ফুল, পাতা, বিচি ও ফল সবই ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল বীজের শাঁস পুরনো পেটের অসুখে উপকারী। তেঁতুল পাতার রস কৃমিনাশক ও চোখ ওঠা সারায়। মুখে ঘা বা ত হলে পাকা তেঁতুল জলে কুলকুচি করলে উপকার পাওয়া যায়।
বুক ধড়ফড় করা, মাথা ঘোরা ও রক্তের প্রকোপে তেঁতুল উপকারী। কাঁচা তেঁতুল বায়ুনাশক। কাঁচা তেঁতুল গরম করে আঘাত পাওয়া স্থানে প্রলেপ দিলে ব্যথা সারে। তেঁতুল গাছের শুকনো বাকলের প্রলেপ, তস্থানে লাগালে ত সারে। পুরনো তেঁতুল খেলে আমাশয়, কোষ্ঠবদ্ধতা ও পেট গরমে উপকার পাওয়া যায়। পুরনো তেঁতুল খেলে কাশি সারে। তেঁতুলের শরবত কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।