ইসলামে সম্পত্তি বন্টন আইন
আল্লাহতালা সূরা আন নিসা আয়াত ৪:১১ এবং ৪:১২ বলেন মাতা বা পিতার
মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সকল সম্পত্তির অধিকার হবে সন্তানদের। এই অংশ
পুত্র ও কন্যার মধ্যে একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান ভাগ হবে
এবং স্ত্রী অংশ হবে ১/৮ যদি স্ত্রী থাকে এবং স্বামীদের অংশ হবে ১/৪ যদি
স্ত্রী ছেড়ে যায়। এ সকল অংশের ভাগ অবধারিত। মৃতের মাতা-পিতা ভাই-বোনের ও
এতিম ছেলে-মেয়েদের ও অংশ আছে তার ও সুষ্ট বন্টনের বর্ণনা রয়েছে সূরা আন
নিসা আয়াত ৪:১১ ৪:১২ এবং ৪:১৭৬ ।মাতা বা পিতার মৃত্যুর পর সন্তানদেও বরাদ্ধ ক্রিত অংশ অবধারিত হক এবং ভাগ বুঝে নেওয়ার পূর্বে সন্তনদের মধ্যে কোন ভাই ও বোনের মৃত্যে হলে সেই ভাই ও বোনের অংশ তাদের সন্তানদের প্রাপ্য। ঐ সন্তানেরা এতীম। এ জানা সত্যে অনেকেই দেশীয়, সামাজিক বা নিজস্ব তৈরী পারিবারের আইনে এতীম সন্তানদের ও মৃতের স্ত্রীর প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেন এবং আল্লাহতালার বর্ণিত সম্পত্তি বন্টনের আদেশকে মিথ্যারোপ করেন, যেনে রাখুন আল্লাহতালার আদেশের মিথ্যারোপ করা এক অমার্জনীয় গুনাহ যার শাস্তি কঠোর। আল্লাহতালা সূরা আন-নিসা আয়াত ৪:১০ বলেন যারা এতীমদের অর্থ -সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং সত্তরই তারা অগ্মিতে প্রবেশ করবে।
আল্লাহতালা আরো বলেছেন (সূরা আন নিসা ৪:১৩) এগুলো আল্লাহর নির্ধারিত সীমা। যে কেউ আল্লাহ ও রসূলের আদেশমত চলে, তিনি তাকে জান্নাত সমূহে প্রবেশ করাবেন, যেগুলোর তলদেশ দিয়ে স্রোতস্বিনী প্রবাহিত হবে। তারা সেখানে চিরকাল থাকবে। এ হল বিরাট সাফল্য।
(সূরা আন নিসা আয়াত ৪:১৪) যে কেউ আল্লাহ্ ও রসূলের অবাধ্যতা করে, তার জন্য রয়েছে আগুনে প্রবেশ ও অপমানজনক শাস্তি।
(সূরা আন নিসা ৪:১৮) যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি।
(সূরা আল-আহযাব ৩৩:৩৬) আল্লাহ ও তার রাসূল কোন বিষয়ে আদেশ প্রদান করলে কোন মুসলিম নর-নারীর পক্ষে উক্ত আদেশের ক্ষেত্রে ভিন্ন ইচ্ছা পোষণ করবার অধিকার নেই। যে আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরোধিতায় লিপ্ত হয়, সে পতিত হয় প্রকাশ্য ভ্রান্তিতে
(সূরা আল-আনকাবুত ২৯:২৩) যারা আল্লাহরআয়াত সমূহ ও তাঁর সাক্ষাত অস্বীকার করে, তারাই আমার রহমত থেকে নিরাশ হবে এবং তাদের জন্যেই যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি রয়েছে।
সম্পত্তি বন্টনে অনেকে সত্য চাপা দিয়ে নিজ ভাই-বোনেরা অংশ আত্বসাত করেন এই ধরনের কুফরী অবলম্বনে আল্লাহতালা বলেন
(৪:১৬৮) যারা কুফরী অবলম্বন করেছে এবং সত্য চাপা দিয়ে রেখেছে, আল্লাহ কখনও তাদের ক্ষমা করবেন না এবং সরল পথ দেখাবেন না। (৪:১৬৯) তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের পথ। সেখানে তারা বাস করবে অনন্তকাল। আর এমন করাটা আল্লাহর পক্ষে সহজ।
কনো দেশিয় সরকার বা গোষ্টি আল্লাহ্তালার দেয়া ইসলামে সম্পত্তি বন্টন আইন জানা সত্যে ইসলাম ধর্মের বিাশ্বাসি মুসলমান মধ্যে ভিন্ন মত ও সম্পত্তি বন্টন দেশিয় আইন প্রয়াগ করেন এবং আল্লাহ্তালার কিতাব কোরানকে বতিল করেন, তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহ্তালার কঠোর শাস্তি । ইসলামে যে মুসলমান বেক্তি দেশিয় আইনের আশ্রয় নিয়ে আল্লাহ্তালার সম্পত্তি বন্টন আইন ও কোরানকে বতিল করেন তাদের জন্য ও রয়েছে কঠোর শাস্তি।
আমাদের কি উপায় আছে আল্লাহ্তালার আয়াত সমূহ অস্বীকার করার ও তাঁর রসূলের (সাঃ) অবাধ্যতা ও মিথ্যারোপ করার ও আল্লাহ্তালার যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি থকে বাঁচার। আসুন আমরা দেখি সূরা আন নিসা আয়াত নং ৪:১১,৪:১২ এবং ৪:১৭৬ কি ভাবে আল্লাহ্তালা সম্পত্তি বন্টন করেতে বলেছেন আর আমরা সম্পত্তি বন্টনে কি কি অন্যায় করে থাকি।
আল্লাহ আমাদেরকে সম্পত্তি শুষ্ট বন্টন সম্পর্কে আদেশ করেন
মৃত ব্যক্তির ওছিয়্যত এবং ঋিন পরিশোধের পর বন্টন যোগ্য সম্পত্তির
মৃত ব্যক্তির ওছিয়্যত এবং ঋিন পরিশোধের পর বন্টন যোগ্য সম্পত্তির
সূরা আন নিসাঃ
১. যদি মৃত ব্যক্তি শুধু ছেলে মেয়ে রেখে মারা যায়। এক ছেলে দু’বোনের সমান অংশ পাবে। (সূরা আন নিসা ৪:১১)২. যদি মৃতব্যক্তি শুধু দুই কন্যা রেখে মারা যায়। সে ক্ষেত্রে কন্যাগণ (সমষ্টিগতভাবে) সম্পদের ২/৩ অংশ পাবে। যদি মৃতব্যক্তি শুধু এক কন্যা রেখে মারা যায়। সে ক্ষেত্রে কন্যা সম্পদের ১/২ অংশ পাবে। (সূরা আন নিসা ৪:১১)
৩. এবং মাতা-পিতা প্রত্যেকে ১/৬ অংশ পাবে যদি মৃতব্যক্তি পুত্র থাকে (সূরা আন নিসা ৪:১১)
৪. যদি মৃতব্যক্তির কোন পুত্র না থাকে মাতা-পিতা ওয়ারিশ হয়, মা ১/৩ অংশ সম্পত্তি পাবে। (সূরা আন নিসা ৪:১১)
৫. যদি মৃতব্যক্তি কয়েকজন ভাই থাকে তাহলে মা ১/৬ অংশ সম্পদ পাবে। ওছিয়্যতের এবং ঋিন পরিশোধের পর। (সূরাআন নিসা ৪:১১)
৬. যদি মৃতব্যক্তি স্ত্রী হয় এবং কোন সন্তান না থাকে তাহলে স্বামি ১/২ অংশ সম্পদ পাবে। যদি সন্তান থাকে তাহলে স্বামি ১/৪ অংশ সম্পদ পাবে। ওছিয়্যতের পর এবং ঋন পরিশোধের পর(সূরাআন নিসা ৪:১২)
৭. যদি মৃতব্যক্তির কোন সন্তান না থাকে তাহলে স্ত্রী ১/৪ অংশ সম্পদ পাবে। যদি সন্তান থাকে তাহলে স্ত্রী ১/৮ অংশ সম্পদ পাবে। ওছিয়্যতের পর এবং ঋন পরিশোধের পর (সূরা আন নিসা ৪:১২)
৮. যদি মৃতব্যক্তির স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি এবং মাতা-পিতা না থাকে, একভাই ও একবোন রেখে মারা যায়, তাহলে তারা ১/৬ অংশ পাবে এবং যদি একভাই ও বোনের চেয়ে বেশী হয়, তাহলে ভাই ও বোন মিলে ১/৩ অংশ পাবে ওছিয়্যতের পর এবং ঋিন পরিশোধের পর। (৪:১২)
৯. যদি মৃত ব্যক্তির ছেলে-মেয়ে না থাকে শুধু এক বোন রেখে মারা যায়, সেইক্ষেত্রে বোন ১/২ অংশ পাবে যদি তার সন্তান না থাকে ভাই উত্তরাধিকারী হবে। (সূরা আন নিসা ৪:১৭৬)
১০. যদি মৃত ব্যক্তির শুধু দুই বোন রেখে মারা যায়, সেইক্ষেত্রে বোন ২/৩ অংশ পাবে (সূরা আন নিসা ৪:১৭৬)
১১. যদি মৃতব্যক্তি শুধু ভাই ও বোন রেখে মারা যায় তাহলে একজন পুরুশ দুইজন নারীর সমান। (সূরা আন নিসা ৪:১৭৬)
এ বিধান আল্লাহ্। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ, সহনশীল।(সূরাআন নিসা ৪:১২)
আল্লাহতালা সম্পত্তি বন্টনের উপর বলেন
[সূরা আন নিসা আয়াত ৪:৭] পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত
সম্পত্তিতে পুরুষদেরও অংশ আছে এবং পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত
সম্পত্তিতে নারীদেরও অংশ আছে; অল্প হোক কিংবা বেশী। এ অংশ নির্ধারিত।- আল্লাহতালা কুরআন শরীফে অত্যান্ত সহজ ও সুষ্ঠ ভাবে সম্পত্তি বন্টনের বর্ণনা এবং অংশ নির্ধারিত করে দিয়েছেন।পিতা-মাতা ও আত্নীয়-স্বজনদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পুরুষ ও নারীর অংশ, পিতা-মাতার অংশ, আত্নীয়-স্বজনদের অংশ,ভাই-বোনের অংশ,সন্তানদের অংশ এবং এতিমদের অংশ।
- আল্লাহতালা কুরআন শরীফে বর্ণনা করেন মৃত ব্যক্তির ওছিয়্যত বন্টন যোগ্য সম্পত্তির।
- আল্লাহতালা কুরআন শরীফে আরো বর্ণনা করেন এতীমদের সম্পদের উপর।
- আল্লাহতালা আমাদেরকে সম্পত্তি শুষ্ট বন্টন সম্পর্কে আদেশ করেন
- অনেকে বিশেষ করে কিছু বড় ভাই জানেরা বা প্রতাপশালী ভাই জানেরা সম্পত্তি বন্টনে আল্লাহতালার আইন জানা সত্যে বোনের অংশ আলোচনা করা বা শুষ্ট বন্টন করেন না।
- অনেক পরিবারে আল্লাহতালার সম্পত্তি বন্টনের আইনকে বাতিল করে পিতা-মাতা পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নিজ আইন প্রয়াগ কর
- অনেকে আল্লাহতালার ওছিয়্যত সম্পত্তির আইন জানা সত্যে ওছিয়্যত করা সম্পত্তি ভাই-বোনের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেন।
- অনেকেই ওসীয়ত শোনা বা দেখার পর ওয়ারিশ গনের সঙ্গে আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করেন না এবং এজমালি সম্পত্তি খেয়াল খুশি মত বিক্রয় করেন,
অনেকে এজমালী সম্পত্তি বন্টন হওয়া বা না হওয়া সত্যে সম্পত্তি বিক্রয় করেন, বাধার সৃষ্টি করেন, ওয়াকফ করেন এবং পরিবারে বিবেদ সৃষ্টি করেন।
আল্লাহতালা বলেন ওছিয়্যত সম্পত্তির দুজনকে সাক্ষী রাখা
[সুরা আল মায়দাহ আয়াত ৫:১০৬] হে, মুমিনগণ, তোমাদের মধ্যে যখন
কারও মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন ওছিয়ত করার সময় তোমাদের মধ্য থেকে ধর্মপরায়ন
দুজনকে সাক্ষী রেখো। তোমরা সফরে থাকলে এবং সে অবস্থায় তোমাদের মৃত্যু
উপস্থিত হলে তোমরা তোমাদের ছাড়াও দু ব্যক্তিকে সাক্ষী রেখো। যদি তোমাদের
সন্দেহ হয়, তবে উভয়কে নামাযের পর থাকতে বলবে। অতঃপর উভয়েই আল্লাহরনামে কসম
খাবে যে, আমরা এ কসমের বিনিময়ে কোন উপকার গ্রহণ করতে চাই না, যদিও কোন
আত্নীয়হয় এবং আল্লাহরসাক্ষ্য আমরা গোপন করব না। এমতাবস্থায় কঠোর গোনাহগার
হব।সংগৃহীত quranandhadithresearch