স্বাগতম

সবার জন্য উন্মুক্ত পেইজ ভিজিট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। *** শিক্ষার কোন বয়স নাই, জানার কোন শেষ নাই। *** বিঃদ্র ( যে সকল ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর লেখা কোন অনুমতি ছাড়া কপি করে এখানে পোষ্ট করেছি, যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে দয়া করে জানাবেন। E-mail: nchafa10@gmail.com, ভালো লাগলে আবার আসবেন।***ধন্যবাদ***

জানাযার নামায ও নিয়ম সমূহ

পবিত্র কোরআন শরীফ, সুরা আলে ইমরান - আয়াত ১৮৫  ‘কুল্লু নাফসিন জায়েকাতুল মাউত’। বাংলা অর্থ- প্রতিটি প্রাণী মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। সুতারাং আমরা যখন মৃত্রু  বরন করব, তখন পৃথিবী থেকে বিদায় জানাতে সবাই একত্রীত হবে।

জানাযার নামায কি? এক কথায়, জানাজার  নামাজ একটি বিশেষ প্রার্থনা বা দোয়া। মৃত মুসলমানকে কবর দেয়ার পূর্বে জানাজার  আয়োজন করা হয়। মুসলমান অর্থাৎ ইসলাম ধর্মামলম্বীদের জন্য এটি ফরযে কেফায়া বা সমাজের জন্য আবশ্যকীয় দায়িত্ব অর্থাৎ কোনো মুসলমানের মৃত্যু হলে মুসলমান সমাজের পক্ষ থেকে অবশ্যই জানাযার নামাজ পাঠ করতে হবে। আরও পড়ুন জানাজার নামাজ

আরও সহজ ভাষায়, মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিয়ে, কাফন পরায়ে তাহার মাগফিরাত ও পরকালে মুক্তির জন্য   একত্র হয়ে যে নামায পড়িতে হয়, তাহাকে জানাযার নামায বলে। এই নামায দাঁড়াইয়া আদায় করিতে হয়, ইহাতে কোন রুকু সিজদা বা বৈঠক ইত্যাদি নাই। 
এই নামায বসিয়া পড়িলে শুদ্ধ হইবে না। এই নামায মুসলমানদের উপর ফরযে কেফায়া অথাৎ জানাযার সংবাদ শ্রবণকারী সকল লোকের পক্ষ হইতেই ফরয আদায় হইয়া যায়, আর কেহই আদায় না করিলে প্রত্যেককেই গুণাহগার হইতে হইবে।
মৃত ব্যক্তি বা মাইয়্যেতকে গোসল দেওয়ার নিয়ম 
মাইয়্যেতকে একখানা টিন, তক্তা অথবা চৌকির উপরে শোয়াইয়া একখানা কাপড় দ্বারা নাভী পাঁটু পর্যন্ত ঢাকিয়া দিবে। শরীরের অন্যান্য কাপড় চোপড় খুলিয়া লইবে। তারপর বড়ই পাতা এবং কর্পুর মেশানোর গরম পানি বা শুধু কর্পুর মিশানোর গরম পানি দ্বারা গোসল করাতে আরম্ভ করিব। গোসল করাইবার সময় পর্দার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখিবে। একটি মশারী খাটাইয়া তার মধ্যে লাশ রাখিয়া সর্ব সাধারণের দৃষ্টির আড়ালে গোসল কারাইবে। মৃতকে গোসলের সময় উত্তর শিয়রি করিয়া লইবে। তারপর গোসল দাতা হাতে একখানা নেকড়া জড়াইয়া সর্ব প্রথম মৃতের গুপ্তস্থানসমূহ ধৌত করাইবে এবং আস্তে আস্তে পেট মর্দ্দন করিবে। ইহাতে নাভী হইতে বা মল মুত্র পথে কোন নাপাক বস্তু বাহির হইলে তাহা ধুইয়া ফেলিবে। তারপর মৃতকে অযু করাইবে (মৃত পাগল বা নাবালেগ হইলে অযু করাইতে হয় না)। অযুতে কুলি করাইতে বা নাকের মধ্যে পানি পৌঁছাতে হয় না। তার পরিবর্তে ভিজা নেকড়া দ্বারা মুখ ও নাসিকার অভ্যন্তর মুছিয়া ফেলিবে। তারপর লাশকে বামদিকের কাত করিয়া প্রথমে ডান দিক ধৌত করিবে। তারপর ডানদিকে কাত করিয়া বাম দিক ধুইয়া ফেলিবে। গোসল শেষ করিযা শুস্ক কাপড় দ্বারা সর্ব শরীর ভালরূপে মুছিয়া দিবে।
মাইয়্যেতের গোসল সম্পর্কীয় নিম্নোক্ত মাছআলাসমূহ অবশ্যই মনে রাখা উচিত।
১) যে ব্যক্তি মাইয়্যেতকে গোসল করাইবে তাহার নিজের ও গোসলের পূর্বে অযু করিয়া লওয়া এবং গোসল করানোর পরে গোসল করা উচিত।
২) মৃত ব্যক্তি পুরুষ হইলে তাহাকে পুরুষ এবং স্ত্রী হইলে তাহাকে স্ত্রী লোকে গোসল করাইবে ।
৩) গোসল করতে পুরুষের জন্য পুরুষ লোক এবং স্ত্রীলোকের জন্য স্ত্রীলোক না পাওয়া গেলে মাহরুম লোক (জীতিতাবস্তায় যাহার সাথে বিবাহ জায়েয ছিল না) মাইয়্যেতকে তৈয়ম্মুম করাইয়া দিবে, গোসলের প্রয়োজন হইবে না।
৪) মাহরুম লোকের অভাব হইলে অন্য কোন ব্যক্তির হাতে কাপড় পেঁচাইয়া তৈয়ম্মুম করাইয়া দিবে।
৫) লোকাভাবে স্ত্রী স্বামীকে গোসল করাইতে পারিবে, কিন্তু স্বামী স্ত্রীলোকে গোসল করাতে পারবে না।
৬) অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক বালিকাদিগকে স্ত্রী-পুরুষ যে কেহ গোসল করাইতে পারে।
৭) সন্তান ভুমিষ্ট হইয়া মূহুর্তমাত্র জীবিত থাকিয়া মরিয়া গেলে তাহাকেও গোসল করাইতে হইবে, অবশ্য অজু করাইতে হইবে না। আর মাতৃগর্ভ হইতে মৃত ভুমিষ্ট হইলে তাহাকে গোসল করাইতে হইবে না।
৮) কেহ পানিতে ডুবিয়া মরিলে তাহাকেও গোসল করাইতে হইবে। অবশ্য পানি হইতে উঠাইবার সময় গোসলের নিয়তে তিন বার নাড়িয়া চাড়িয়া উঠাইলে গোসল আদায় হইয়া যায়।
৯) ধর্ম যুদ্ধে শহীদ ব্যক্তিকে গোসল করাইতে হয় না।
১০) সমস্ত শরীর একবারে পানি বহাইয়া গোসল করান ওয়াজিব, কিন্তু তিন তিনবার করিয়া সমস্ত শরীরে পানি ঢালিয়া ধৌত করা মুস্তাহাব।
সুত্রঃ http://www.madina24.com

কাপড় ও মৃত লাশকে কাপড় পরিধান করার নিয়মঃ 
পুরুষ এবং স্ত্রী লাশের কাফন দেওয়ার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য রহিয়াছে। 
যথাঃ পুরুষের জন্য মোট তিনখানা কাপড় ব্যবহার করিতে হয়।
১) লেফাফা বা চাদর ২) পিরহান ৩) ইযার বা তহবন্দ। ইহা পুরুষের জন্য সুন্নত কাফন। পুরুষের জন্য কেফায়া কাফন দুইখানা; যথাঃ ১) চাদর। ২) ইযার। অর্থাৎ এই দুইখানা কাফন পরাইলেই ফরযে কেফায়া আদায় হইয়া যায়। ওজর বশতঃ কাপড় না মিলিলে পুরুষকে শুধু একখানা কাপড় অর্থাৎ ইযার পড়াইয়াও দাফন করা যায়। ইহাকে পুরুষের জরুরত কাফন বলে।
কাপড় পরিধান করার নিয়মঃ একখানা খাট বা তক্তার উপরে প্রথমে চাদর তারপর ক্রমান্বয়ে ইযার ও পিরহান বিছাইবে। তারপর কাফনের উপরে লাশ শোয়াইয়া উহার নাক, ললাট ও ছিনা ইত্যাদি স্থানে কিছু খুশবু লাগইয়া প্রথমে পিরহান লেপটাইবে। এই ভাবে চাঁদরও লেপটাইয়া দিবে।
স্ত্রীলোকের জন্য সুন্নত কাফন পাঁচখানা। তাহার প্রথম তিনখানা পুরুষের মত আর অতিরিক্ত দুইখানা ১) ছিনাবন্দ এবং ২) ওড়না। স্ত্রীলোকের জন্য কেফায়া কাফন তিনখানা যথাঃ ১) চাদর ২) পিরহান এবং ৩) ইযার।
স্ত্রীলোকের জরুরত কাপড় দুইখানা। ১) চাদর (লেফাফা) এবং ২) ইযার। লেফাফা মাথা হইতে পায়ের সৃদ্ধাঙ্গুলীর চেয়ে কিছু বেশী লম্বা করিবে। পিরহান ঘাড় হইতে হাঁটুর নীচ পর্যন্ত লম্বা করিবে। স্ত্রীলোকের ছিনাবন্দ হাঁটু পর্যন্ত চওড়া করিবে এবং ওড়না দুই হাত দৈর্ঘ্য ও এক হাত প্রস্থ্য রাখিবে।
কাপড় পরিধান করার নিয়মঃ প্রথমে ছিনাবন্দ বিছাইবে তারপর ক্রমান্বয়ে লেফাফা, ইযার ও পিরহান বিছাইবে। তারপরলাশ শয়ন করাইয়া পুরুষের ন্যায় খুশবু লাগাইয়া প্রথমে পিরহান পরাইবে। তারপর মাথার চুল দুই ভাগ করিয়া কাঁধের দুই দিক দিয়া আনিয়া বুকের উপর রাখিবে এবং ওড়না মাথায় জড়াইয়া উহা দ্বারা ছিনার উপরের চুলও ঢাকিয়া দিবে। তারপর প্রথমে বামদিক হইতে এবং পরে ডান দিক হইতে ক্রমান্বয়ে ইযার, লেফাফা ও ছিনাবন্দ পরাইয়া দিবে। কাফন পরান হইয়া গেলে একটু পেঁচাইয়া মাথার উপরে ও পায়ের নীচে নেকড়া কিংবা সূতা দ্বারা হালকাভাবে বাঁধিয়া দিবে।

জানাযা নামাযের নিয়ত ও নিয়মঃ 

نَوَيْتُ اَنْ اُؤَدِّىَ لِلَّهِ تَعَا لَى اَرْبَعَ تَكْبِيْرَاتِ صَلَوةِ الْجَنَا زَةِ فَرْضَ الْكِفَايَةِ وَالثَّنَا ءُ لِلَّهِ تَعَا لَى وَالصَّلَوةُ  عَلَى النَّبِىِّ وَالدُّعَا ءُلِهَذَا الْمَيِّتِ اِقْتِدَتُ بِهَذَا الاِْمَامِ مُتَوَجِّهًا اِلَى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِ يْفَةِ اَللَّهُ اَكْبَرُ

উচ্চারণঃ  নাওয়াইতু আন উয়াদ্দিয়া লিল্লাহে তায়ালা আরবাআ তাকরীরাতে ছালাতিল জানাযাতে ফারযুল কেফায়াতে আচ্ছানাউ লিল্লাহি তায়ালা ওয়াচ্ছালাতু আলান্নাবীয়্যে ওয়াদ্দোয়াউ লেহাযাল মাইয়্যেতে এক্কতেদায়িতু বিহাযাল ইমাম মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতে আললাহু আকবার।
অনুবাদঃ আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে জানাযা নামাজের চারি তাকবীর ফরযে কেফায়া কেবলামুখী হয়ে ইমামের পিছনে আদায় করার মনস্থ করলাম। ইহা আল্লাহু তায়ালার প্রশংসা রাসূলের প্রতি দরূদ এবং মৃত ব্যক্তির জন্য দোয়া (আর্শীবাদ) আল্লাহ মহান।
নিয়তের মধ্যে অন্যান্য জামাতের নামাযের নিয়তের ন্যায় ইমাম তাহার অতিরিক্ত খাছ কালাম (আনা ইমামুলেলমান হাজারা ওয়া মাইয়্যাহজুরু) এবং মোক্তাদিগণ তাহাদের অতিরিক্ত খাছ কালামটি পাঠ করিলে। (একতেদাইতু বেহাযাল ইমাম) আর নিয়তের ‘লেহাযাল মাইয়্যেতে’ শব্দটি কেবল পুরুষ লাশের বেলায় বলিতে হইবে, কিন্তু স্ত্রী লাশ হইলে ঐ শব্দটির স্থলে ‘লেহাযিহিল মাইয়্যেতে’ বলিতে হইবে।

ইমাম ও মোক্তাগিণ একই সঙ্গে নিয়া কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাইয়া তাকবীরে তাহরীমা বলিয়া হাত বাঁধিবে। ইহার পর ক্রমান্বয়ে আর ও অতিরিক্ত তিনটি তাকবীর বলিতে হইবে, তবে তাহাতে হাত উঠাইতে হইবে না, বরং তাহরিমা বাঁধা অবস্থায় থাকিবে। তাকবীর ইমাম এক শব্দ করিয়া উচ্চারণ করিবেন আর মোক্তাদিরা চুপে চুপে বলিবে।
অতিরিক্ত তাকবীর তিনটি বলিবার নিয়ম এইরূপ প্রথম অর্থাৎ তাকবীরে তাহরীমার পরে প্রত্যেকে (চুপে চুপে) ছানা পাঠ করিবে। তারপর ২য় তাকবীর বলিয়া (চুপে চুপে) দুরুদ পাঠ করিবে তৃতীয় তাকবীর বলিয়া  দরূদ পটিত হয়। তারপর  তাকবীর বলিয়া সালাম ফিরাইয়া নামাজ শেষ করিবে।
লাশ কবরে শোয়াইবার দোয়া
بِسْمِ اللهِ وَ عَلَى مِلَّةِ رَسُوْلِ اللهِ-
আরবি উচ্চারণঃ বিসমিল্লাহি ওয়া আলা মিললাতি রাসূলিললাহি।
বাংলা অনুবাদঃ আললাহপাকের নামে ও তাঁহার রাসূলের মাযহাবের (ধর্মমত) উপর (ইহাকে) সোপর্দ করিলাম।
লাশ কবরে শোয়াইবার নিয়ম
মুর্দা কবরে শোয়াইয়া দিবার পর উহার উপরিভাগে বাঁশ অথবা অন্য কোন গাছ একখানার সাথে আর একখানা গায় গায় মিলাইয়া স্থাপন করিবে। বাঁশ বিছান হইলে উহার উপরে চাটাই, কলাপাতা, হুগলা অথবা অন্য কোন বস্তু বিছাইয়া দিবে। তারপর মাটি দ্বারা উহা ভাল করিয়া আটকাইয়া দিবে।
প্রথমে পাঠ করিবে এবং এক এক মুষ্টি মাটি কবরে দিবেঃ
১।مِنْهَاخَلَقْنَاكُمْ  মিনহা খালাক্কনাকুম। অর্থাৎ ইহাতেই তোমাদিগকে সৃষ্টি করিয়াছি।
২।وَفِيْهَا نُعِيْدُ كُمْ ওয়া ফিহা নুয়ীদুকুম। অর্থাৎ(আবার) ইহাতেই তোমাদিগকে প্রত্যাবর্তন করাইব।
৩।وَمِنْهَا نُخْرِجِكُمْ تَارَةً اُخْرَى  ওয়ামিনহা নুকরিজুকুম তারাতান উখরা। অর্থাৎ (পুনর্বার) ইহা হইতে তোমাদিগকে বহির্গত করিব।
এইভাবে তিন মুষ্টি করিয়া মাটি দিবার পর প্রথমে কবরের মাথার দিক হইতে (উত্তর দিক) কোদাল দ্বারা বেশী করিয়া মাটি টানিয়া দিতে থাকিবে। কবরের চারিদিকে নীচু রাখিয়া মধ্যস্থান এক বিঘতের একটু বেশী পরিমান উঁচু করিবে। ইহার চতুর্দিকে চারিটি কোণের সৃষ্টি না করিয়া সমস্ত কবরটিকে একটি মাছের পিঠের ন্যায় আকৃতি বানাইয়া দিবে। কবরের দুই দিকে লাশের মাথা ও পা বরাবর জোড়া করিয়া দুইখানি ডাল পুঁতিয়া রাখিবে।
সুত্রঃ  http://www.madina24.com

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে একটিভ থাকুন

১লা মে দিবস / শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন

১লা মে দিবসের ছবি ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। ১লা মে মহান মে দিবস। ১লা মে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ স...