স্বাগতম

সবার জন্য উন্মুক্ত পেইজ ভিজিট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। *** শিক্ষার কোন বয়স নাই, জানার কোন শেষ নাই। *** বিঃদ্র ( যে সকল ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর লেখা কোন অনুমতি ছাড়া কপি করে এখানে পোষ্ট করেছি, যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে দয়া করে জানাবেন। E-mail: nchafa10@gmail.com, ভালো লাগলে আবার আসবেন।***ধন্যবাদ***

উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টন

উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টন কীভাবে করতে হয় জেনে নি। 

মিরাস বা উত্তরাধিকারের অর্থ হলো, একের অনুপস্থিতিতে অন্যের অধিকার। সে হিসেবে কারও মৃত্যুর পর অন্যের যে অধিকার জন্মায় তাকে উত্তরাধিকার বলে। একজনের জীবদ্দশায় কারও সম্পদে কখনও অন্যজনের অধিকার জন্মায় না। ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান হচ্ছে উত্তরাধিকার সম্পদের সুষম বণ্টন। কাউকে কোনোভাবে তার প্রাপ্ত মিরাস থেকে বঞ্চিত করা কবিরা গোনাহ। ন্যায্যভাবে উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন ফরজ কাজ। তবে এ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে আবার কেউ জেনে-বুঝে সম্পদের মোহে উত্তরাধিকার সম্পদ ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন করে না। এমন মনোভাব স্পষ্ট গোনাহের কাজ। তওবা ছাড়া যার ক্ষমা নেই। অবশ্য কিছু সচেতন লোক রয়েছেন, যারা শত প্রতিকূলতার মধ্যেও উত্তরাধিকার সম্পত্তি বণ্টন করে থাকেন।আমাদের সমাজে উত্তরাধিকার সম্পদ থেকে বেশি বঞ্চিত হয় নারীরা। নারীদের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জন্য নানা অজুহাত ও উপায় দাঁড় করানো হয়। বিশেষত বিয়ের সময় প্রদেয় আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী প্রদানের কারণে কিংবা ভাইয়েরা বোনদের বিভিন্ন উপলক্ষে নানা উপহার প্রদানের অজুহাতে নারীদের মিরাস দেওয়া হয় না। এরপরও বোনরা মিরাস দাবি করলে কিংবা মিরাসের হিস্যা নিয়ে গেলে তাদের জন্য বাপের বাড়ির দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়; ভাইবোনের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে যায়। ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধরনের আচরণ চরম অন্যায়, অমানবিক ও কঠিন গোনাহের কাজ। মনে রাখতে হবে, বিয়েতে বা বিয়ের পরে বোন বা কন্যাকে যত সম্পদই প্রদান করা হোক, তা উপহাররূপে গণ্য। যাকে আত্মীয়তার হক বলা যেতে পারে। মিরাসের হিস্যার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। এ কারণে কোনোভাবেই মিরাসের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। তাদের মিরাসি হক আদায় না করা পর্যন্ত তাদের অধিকার কখনও শেষ হবে না। এ বিষয়ে সবার সচেতনতা জরুরি।


আল্লাহতায়ালা মিরাস বণ্টনের নিয়ম-কানুন বর্ণনা শেষে বলেন, 'এসব আল্লাহর নির্ধারিত সীমারেখা। আর কেউ আল্লাহ ও রাসূলের অবাধ্য হলে এবং তার নির্ধারিত সীমারেখা লঙ্ঘন করলে তিনি তাকে আগুনে প্রবেশ করাবেন।' -সূরা নিসা : ১৩-১৪


অনেকে মৃত্যুর পূর্বে অসিয়তের মাধ্যমে অন্যের বৈধ অধিকার নষ্ট করে, এটাও অন্যায়। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, 'কোনো পুরুষ ও স্ত্রী ষাট বছরব্যাপী আল্লাহর পূর্ণ আনুগত্য করে অতঃপর মৃত্যুর সম্মুখীন হয় এবং অসিয়তের মাধ্যমে অন্যের ক্ষতিসাধন করে। এর ফলে জাহান্নাম তার জন্য অনিবার্য হয়ে যায়।' -তিরমিযি ও আবু দাউদ


কেউ আবার দানের কথা বলে কোনো সন্তানকে বঞ্চিত করেন। এটাও ইসলাম স্বীকৃত নয়। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত নোমান বিন বশির (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'তার পিতা তাকে নিয়ে হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) কাছে যান এবং বলেন, আমি আমার এই ছেলেকে কিছু দান করেছি। তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তুমি কি তোমার প্রত্যেক ছেলেকে এরূপ দান করেছ? তিনি জবাবে বলেন, না। তখন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তা প্রত্যাহার কর।' -বুখারি ও মুসলিম


বর্ণিত হাদিসের আলোকে বলা যায়, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) দানের ক্ষেত্রে সন্তানদের কাউকে অগ্রাধিকার দেওয়া কিংবা কাউকে বঞ্চিত করাকে কঠোরভাবে নিষেধ করেছেন এবং এমন কাজের পরিণতি সম্পর্কে সাবধান করে দিয়েছেন। এমন কাজের জন্য অবশ্যই আল্লাহর দরবারে জবাবদিহি করতে হবে। উলেল্গখ্য, আইন অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি নানাভাবে সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন। যেমন দান, উইল, বিক্রয় ইত্যাদি। মুসলিম আইনে উইলের দ্বারা প্রদেয় সম্পদ ভোগের অধিকার উইলকারীর মৃত্যুর পর কার্যকর হবে। উইলের ক্ষেত্রে কোনোভাবেই এক-তৃতীয়াংশের বেশি সম্পত্তি দেওয়া যাবে না।


আরেকটি কথা, বিভিন্ন কারণে অনেকেই নিজ সন্তানকে ত্যাজ্য ঘোষণা করে তাকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করার ঘোষণা দেন। আমাদের দেশে এ রকম ঘটনার কথা প্রায়ই শোনা যায়। মুসলিম আইন অনুযায়ী, জন্মসূত্রে কোনো সন্তান তার পরিবারের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার অর্জন করে এবং এই অধিকার কোনোভাবেই খর্বযোগ্য নয়। সাধারণত দেখা যায়, বাবা যদি কোনো সন্তানকে ত্যাজ্য করেন, তবে তার মৃত্যুর পর অন্যান্য উত্তরাধিকার সেই সন্তানকে আর সম্পত্তির অংশ দিতে চান না। এটাও ইসলাম স্বীকৃত বিষয় নয়। ত্যাজ্য একটি ভুল বিষয় এবং এটা কোনোভাবেই আইনে স্বীকৃত নয়। মুসলিম আইন উত্তরাধিকার স্বত্বের অধিকারকে চিরন্তন সত্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।

সুত্রঃ মুফতি এনায়েতুল্লাহ 

প্রশ্নঃ জীবিত অবস্থায় ওয়ারিসদের মাঝে সম্পদ বন্টন করা যাবে কি না এবং তাতে কোন পদ্ধতি অবলম্বন করবে?

উত্তরঃ জীবিত অবস্থায় সম্পদ বন্টন করলে তা মূলত হেবা হয়। তাই এ ক্ষেত্রে সকলকে সমান সমান করে দেয়া যাবে। তবে বর্তমানে যেহেতু মৃত্যুর পরের বন্টন পূর্বে করে দেয়া হয়, তাই মিরাস অনুযায়ী বন্টন করাই শ্রেয়।  (দেখুনঃ ফাতওয়ায়ে মাহমূদীয়া)


প্রশ্নঃ পালকপুত্র মিরাস পাবে কি না?

উত্তরঃ শরীয়াতের দৃষ্টিতে বাবা-মায়ের শুধুমাত্র ঔরশজাত সন্তানই মিরাস পাবে। পালিত পুত্র মিরাস বা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তির অংশীদার হয় না। (দেখুনঃ আস্-সিরাজী)

প্রশ্নঃ বিয়ে হওয়ার পর যদি স্বামী-স্ত্রী বাসর ও মিলন হওয়ার পূর্বে স্বামী মারা যায় তাহলে স্ত্রী তার সম্পদের অংশ পাবে কি না?

উত্তরঃ হ্যাঁ, বর্ণনা অনুযায়ী, উক্ত স্ত্রী তার মৃত স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পদের উত্তরাধিকারীনী হবে এবং এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পদের এক চতুর্থাংশের উত্তরাধিকারী হবে। (দেখুনঃ আস্-সিরাজী


প্রশ্নঃ কি কি কারণে একজন ওয়ারিস মিরাস থেকে বঞ্চিত হয়?

উত্তরঃ উত্তরাধিকার লাভে অন্তরায় চারটি। এক. দাসত্ব, চাই তা পূর্ণাঙ্গ কিংবা অপূর্ণাঙ্গ হোক। দুই. এমন হত্যা যার সাথে কিসাস বা কাফ্ফারা ওয়াজিব হয়। তিন. ধর্মের ভিন্নতা। চার. উভয়ের রাষ্ট্রের ভিন্নতা। (তা কেবল অমুসলিমদের জন্যই পজোয্য। চাই এ রাষ্ট্রের ভিন্নতা প্রকৃত হোক, যেমন- দারুল হারবের অধিবাসী কাফির ও জিম্মি। কিংবা হুকুমের দিক বিবেচনায় হোক। যেমন- নিরাপত্তা গ্রহণকারী ও জিম্মি। আর রাষ্ট্রের ভিন্নতা সৈন্যবাহিনী ও শাসকের বিভিন্নতার দ্বারা সাব্যস্ত হয়। (দেখুনঃ আস্-সিরাজী)


প্রশ্নঃ মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পদের সাথে কয়টি অধিকার সম্পৃক্ত হয়?

উত্তরঃ মৃত ব্যক্তির পরিত্যাক্ত সম্পদের সাথে ধারাবহিকভাবে চারটি হক/অধিকার সম্পর্কিত হয়। প্রথমত ঃ অপব্যয় ও কার্পণ্য ব্যতীত মধ্যপন্থায় তার কাফন ও দাফন কার্য সম্পাদন করা হবে। দ্বিতীয়ত ঃ তার অবশিষ্ট সমুদয় সম্পদ হতে তার ঋণসমূহ পরিশোধ করা হবে। তৃতীয়ত ঃ ঋণ পরিশোধের পর অবশিষ্ট সম্পদের এক-তৃতীয়াংশ হতে তার অসিয়ত পূরণ করা হবে যদি সে ওসিয়ত করে থাকে। চতুর্থ ঃ তার অবশিষ্ট সম্পদকে তার ওয়ারিশগণের মধ্যে কিতাবুল্লাহ, সুন্নাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও ইজমায়ে উম্মতের সিদ্ধান্ত মোতাবেক বণ্টন করা হবে। (দেখুনঃ আস্-সিরাজী) 


নেট থেকে সংগৃহীত 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে একটিভ থাকুন

১লা মে দিবস / শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন

১লা মে দিবসের ছবি ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। ১লা মে মহান মে দিবস। ১লা মে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ স...