দেখুন, হাদিস অনুযায়ী ছোট বাচ্চাদের মসজিদে নিয়ে যাওয়া বা নামাজ পড়ার ব্যাপারে কি বলে বা জানি?
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা তোমাদের বাচ্চাদের সাত বছর বয়স থেকেই নামাজের নির্দেশ দাও। আর যখন ১০ বছর বয়সে উপনীত হবে, তখন তাদের নামাজে অবহেলায় শাস্তি প্রদান করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস নং- ৪৯৫)
আমরা একদা যুহর কিংবা আসর নামাজের জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম। বেলাল (রাঃ) রাসুল (সাঃ) কে নামাজের জন্য ডাকলেন। রাসুল (সাঃ) তার নাতনী হযরত উমামাহ (রাঃ) কে কাঁধে করে নিয়ে আমাদের কাছে আসলেন। রাসুল (সাঃ) ইমামতির জন্য নামাজের স্থানে দাড়ালেন আমরা তার পিছনে দাঁড়িয়ে গেলাম অথচ, সে (উমামাহ রা.) তার স্থানে তথা রাসুল (সাঃ) এর কাধেই আছে। রাসুল (সাঃ) নামাজের তাকবির দিলেন আমরাও তাকবীর দিলাম। রাসুল (সাঃ) রুকু করার সময় তাকে পাশে নামিয়ে রেখে রুকু ও সিজদাহ করলেন। সিজদাহ শেষে আবার দাড়ানোর সময় তাকে আগের স্থানে উঠিয়ে নিতেন। এভাবে নামাজের শেষ পর্যন্ত প্রত্যেক রাকাতেই তিনি এমনটি করে যেতেন। (সুনান আবু দাউদ ৯২০)
এ ছাড়াও রাসুল (সাঃ) এর খুতবা দেয়ার সময় তার নাতি ইমাম হাসান (আ.) ও হুসাইন (আ.) আসলে তিনি খুতবা দেয়া বন্ধ রেখে তাদেরকে জড়িয়ে ধরে আদর করতেন, কোলে তুলে নিতেন চুম্বন করতেন আর বলতেন খুতবা শেষ করা পর্যন্ত আমি ধৈর্য ধারণ করতে পারব না। তাই, আমি খুতবা দেয়া বন্ধ করেই এদের কাছে চলে এসেছি। (নাসায়ী শরীফ)
মুহাম্মাদ সঃ নিজে বাচ্চাদেরকে কোলে রেখে নামায পড়িয়েছেন। আর আমাদের বুজুর্গ-মুসল্লিরা মসজিদেই তাদের উপস্থিতি সহ্য করতে পারেন না। রাসুলুল্লাহ সঃ বলেছেন, যে আমাদের ছোটদেরকে স্নেহ করে না এবং বড়দেরকে সম্মান করতে জানে না সে আমার দলভুক্ত নয়। (আবু দাউদ, তিরমীজি, মুসনাদে আহমদ)
দ্বিতীয়ত, নামাজের কাতারে বুঝমান নাবালেগ শিশুর অবস্থান। বুঝ হয়েছে, এমন নাবালেগ শিশুদের ব্যাপারে বিধান হলো, যদি শিশু একজন হয়, তাহলে তাকে বড়দের কাতারেই সমানভাবে দাঁড় করাবে। এ ক্ষেত্রে বড়দের নামাজের কোনো অসুবিধা হবে না। একাধিক শিশু হলে সাবালকদের পেছনে পৃথক কাতারে দাঁড় করানো সুন্নত। তবে হারিয়ে যাওয়া বা দুষ্টুমি করার আশঙ্কা হলে, বড়দের কাতারেও মুসল্লিদের মাঝে মাঝে দাঁড়াতে পারবে। (আলবাহরুর রায়েক-১/৬১৮, আদ্দুররুল মুখতার-১/৫৭১) মসজিদে ছোটরা এলে দুষ্টুমি করবে-এটাই স্বাভাবিক। তাই ছোটরা নামাজে এলে তাদেরকে পাশে নিয়ে নামাজে দাঁড়ান, তাদের আলাদাভাবে দাঁড়াতে দেবেন না। ছোটরা আলাদাভাবে দাঁড়ালে দুষ্টুমি করবে, বড়দের সঙ্গে একত্রে দাঁড়ালে দুষ্টুমি করার সুযোগ পাবে না। সেই সঙ্গে তাদের আদর-স্নেহ দিয়ে বুঝিয়ে বলুন, মসজিদে হাসাহাসি-দুষ্টুমি করলে মসজিদের পবিত্রতা এবং মুসল্লিদের মনোযোগ নষ্ট করে। দেখবেন তারা চুপ থাকবে। হাদিসে আছে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ছোটদের দয়া আর বড়দের শ্রদ্ধা করেনা সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত না! (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ১/৬) সংগৃহীত লিংক সুত্রঃ sonalinews
অন্যদিকে, ইরানে এখনো বাচ্চাদের কিচির মিচির ছাড়া নামাজ আদায় করে না। বাচ্চাদের মসজিদে পরিবার থেকে নিয়ে যায়। পেছনে বাচ্চারা খেলা করে, আর সামনে প্রাপ্ত বয়স্করা নামাজ আদায় করে।
তুরস্কে শিশুরা মসজিদে গেলে তাদের চকলেট দেয়া হয়। তাইতো ওসব দেশে শিশুরা আনন্দের সঙ্গে মসজিদে ছুটে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে হয় তার উল্টো।
ফেসবুকে ব্যনারের ছবির নীচে কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন, এমন ধমকের শিকার হলে হয়তো শিশুরা ভাবতে পারে মসজিদে গিয়ে ধমক খাওয়ার চাইতে বাসায় বসে কম্পিউটারে গেইমস খেলাই ভালো।
কোমলমতি বাচ্চাদের নামাজে আগ্রহী করতে আমাদের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা খুবই জরুরি। তাই আসুন, বাচ্চাদের স্নেহ করি এবং তাদেরকে মসজিদে যাবার ব্যপারে উৎসাহিত করে একজন আল্লাহ ভীরু নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলি। সংগৃহীত। nagorikbarta
ছোট বাচ্চাদের নিয়ে হাদিস
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, 'আল্লাহ তোমাদের থেকে তোমাদের জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের যুগল হতে তোমাদের জন্য পুত্র ও পৌত্রাদি সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের উত্তম জীবনোপকরণ দিয়েছেন। ' (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ৭২)। শিশু মানবজাতির অতীব গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শিশুরা নিষ্পাপ, শিশু পবিত্রতার প্রতীক।
ছোট বাচ্চাদের নামাজের ছবি