স্বাগতম

সবার জন্য উন্মুক্ত পেইজ ভিজিট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। *** শিক্ষার কোন বয়স নাই, জানার কোন শেষ নাই। *** বিঃদ্র ( যে সকল ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর লেখা কোন অনুমতি ছাড়া কপি করে এখানে পোষ্ট করেছি, যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে দয়া করে জানাবেন। E-mail: nchafa10@gmail.com, ভালো লাগলে আবার আসবেন।***ধন্যবাদ***

নামাজ নিয়ে কিছু কথা (নামাজ সম্পর্কিত কুরআন ও নামাজ সম্পর্কিত হাদিস)

নামাজ কি? নামায ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। ঈমান বা বিশ্বাসের পর নামাযই ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। নামাজ শব্দটি ফার্সি ভাষা থেকে উদ্ভূত এবং বাংলা ভাষায় পরিগৃহীত।আর যা আরবি ভাষায় সালাত শব্দে কুরআনে এসেছে। কুরআনিক প্রতিশব্দ বাংলা ভাষায় 'সালাত'-এর পরিবর্তে সচরাচর 'নামাজ' শব্দটিই ব্যবহৃত হয়। ফার্সি , উর্দু, হিন্দি , তুর্কী এবং বাংলা ভাষায় একে নামাজ বলে। কিন্তু এর মূল আরবি নাম সালাত। অর্থাৎ"সালাত" -এর আভিধানিক অর্থ স্মরণ করা, সংযোগ স্হাপন করা ইত্যাদি।

দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা ফরজ।  ফরজের পাশাপাশি প্রত্যেক ওয়াক্তেই ওয়াজিব, সুন্নাত এবং নফল নামাজ রয়েছে। এখান থেকে জানতে পারবেন। নামাজ কত রাকাত? নামাজ কয় রাকাত ও কি কি? নামাজের ফরজ কয়টি? পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের ফরজ কয়টি? নামাজের ফরজ কয়টি এবং কি কি? নামাজ পড়ার নিয়ম- 

সালাতুল ফজরঃ ফজরে প্রথমে দুই রাকাআত সুন্নাত এবং পরে দুই রাকাআত ফরজ।
সালাতুল জোহরঃ যুহরের নামাজ প্রথমে চার রাকাআত সুন্নাত। তারপর চার রাকাআত ফরজ এবং তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত। এ দশ রাকাআত পড়া উত্তম। কেউ কেউ সর্বশেষ দুই রাকআত নফল নামাজও পড়ে। এ হিসেবে জোহরের নামাজ ১২ রাকাআত আদায় করা হয়।
সালাতুল আসরঃ আসরের নামাজ চার রাকাআত পড়া ফরজ। কেউ কেউ ফরজের পূর্বে চার রাকাআত সুন্নাত নামাজ পড়ে থাকে।
সালাতুল মাগরিবঃ মাগরিবে প্রথম তিন রাকাআত ফরজ। তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত। কেউ কেউ সুন্নাতের পর দুই রাকাআত নফল পড়ে থাকে।
সালাতুল ইশাঃ ইশার নামাজে চার রাকাআত ফরজ। তারপর দুই রাকাআত সুন্নাত। অতপর তিন রাকাআত বিতর। বিতর পড়া ওয়াজিব। অনেকে ফরজের পূর্বে চার রাকাআত সুন্নাত এবং বিতরের পর দুই রাকাআত নফলও নামাজ পড়ে থাকে।

পরিশেষে
সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে ফজর ৪ রাকাআত; জোহর ১০ রাকাআত; আসর ৪ রাকাআত, মাগরিব ৫ রাকাআত এবং ইশার ৯ রাকাআত নামাজ যথাযথ আদায়ে যত্নবান হওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি প্রত্যেক ওয়াক্তের আগে পরের সুন্নাত ও নফল আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।  দৈনন্দিন জীবনে ইসলাম অবলম্বনে।

নামাজ পড়ার ছবি 

ছবি সংগৃহীত

নামাজ ভঙ্গের কারণ কয়টি ও কি কিঃ 

নামাজ ভঙ্গের কারণ ১৯টি। যথা- 

১. নামাজে অশুদ্ধ কিরাত পড়া।
২. নামাজের ভিতর কথা বলা।
৩. কোনো লোক কে সালাম দেয়া।
৪. সালামের উত্তর দেয়া।
৫. উহ আহ শব্দ করা।
৬. বিনা উজরে কাশা।
৭. আমলে কাসির করা।
৮. বিপদে কি বেদনাই শব্দ করিয়া কাদা।
৯. তিন তাসবীহ পরিমাণ সতর খুলিয়া থাকা।
১০. মুক্তাদি ব্যাতীত অপর ব্যাক্তির লুকমা লওয়া।
১১. নাপাক জায়গায় সিজদা করা।
১২. সাংসারিক কোন বিষয়ে প্রার্থনা করা।
১৩. খাওয়া ও পান করা।
১৪. হাঁচির উত্তর দেয়া।
১৫. কিবলার দিক হয়তে সিনা ঘুরিয়ে যাওয়া।
১৬. সুসংবাদ ও দু:সংবাদের উত্তর দেয়া।
১৭. ঈমামের আগে মুক্তাদি দাঁড়ানো।
১৮. প্রতি রুকনে দুই বারের বেশি শরীর চুলকানো।
১৯. নামাজে কুর্আন শরিফ দেখিয়া পরা।

নামাজের নিষিদ্ধ সময়

উকবা বিন আমের (রা.) বলেন, ‘তিনটি সময়ে রাসুল (সা.) আমাদের নামাজ পড়তে এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করতেন। সূর্য উদয়ের সময়, যতক্ষণ না তা পুরোপুরি উঁচু হয়ে যায়; সূর্য মধ্যাকাশে অবস্থানের সময় থেকে নিয়ে তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়া পর্যন্ত; আর যখন সূর্য অস্ত যায়।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৩)

আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই; আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোনো নামাজ নেই।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৫১)

সুতরাং নামাজের নিষিদ্ধ সময় পাঁচটি—

১. সূর্যোদয়ের সময়, যতক্ষণ না তার হলুদ রং ভালোভাবে চলে যায় এবং আলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এর জন্য আনুমানিক ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয়।

২. ঠিক দ্বিপ্রহরের সময়, যতক্ষণ না তা পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়ে।

৩. সূর্য হলুদ বর্ণ ধারণ করার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে কেউ যদি ওই দিনের আসরের নামাজ সঠিক সময়ে পড়তে না পারে, তাহলে সূর্যাস্তের আগে হলেও তা পড়ে নিতে হবে। তবে এটি কাজা হিসেবে পড়বে না।

৪. ফজরের নামাজের পর থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত।

৫. আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, যেহেতু সূর্যের উদয় ও অস্ত সব সময় একই সময়ে হয় না, তাই ঘড়ির সময় অনুপাতে তা বর্ণনা করা কঠিন। সুতরাং এর জন্য স্থায়ী ক্যালেন্ডারের সাহায্য নেওয়া যায়।


নামাজ সম্পর্কিত কুরআন ও নামাজ সম্পর্কিত হাদিস

নামাজ সম্পর্কিত কুরআন 

(১) তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। আর নিঃসন্দেহে তা বড়ই কঠিন- বিনীতদের জন্যে ছাড়া । ( সূরা: বাকারাহ, আয়াত ৪৫)

(২) বল, নিশ্চয় আমার সালাত, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ জগৎ সমূহের প্রতি পালক আল্লাহর জন্যে। (সূরা: আনয়াম, আয়াত: ১৬২)

(৩) তোমরা সালাত সমূহের প্রতি এবং ( বিশেষ করে ) মধ্যবর্তী সালাতের প্রতি যত্ন বান হও, এবং আল্লাহর (সন্তুষ্টির)  জন্যে একান্ত অনুগত অবস্থায় দাড়াও। (সূরা: বাকারাহ, আয়াত: ২৩৮)

(৪) আমি যদি তাদেরকে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করি (ক্ষমতা ও সম্পদ দ্বারা) তাহলে তারা সালাত কায়েম করবে, সৎ কাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎ কাজ  হতে নিষেধ করবে, আর সব কাজের পরিণাম আল্লাহর (নিকট) (সূরা: হাজ, আয়াত: ৪১)

(৫)  আপনি আপনার প্রতি প্রত্যাদিষ্ট কিতাব পাঠ করুন এবং নামাজ কায়েম করুন। নিশ্চয় নামাজ অশ্লীল ও গর্হিত কার্য থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর স্মরণ সর্বশ্রেষ্ঠ। আল্লাহ জানেন তোমরা যা কর। (সূরা: আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)  

(৬) এবং তুমি সালাত কায়েম কর দিনের দুই দিনের দুই প্রান্তে ও রাতের প্রথমাংশে। নিশ্চয় ভালো কাজ মন্দ কাজকে মিটিয়ে দেয়। উপদেশ গ্রহণকারীদের জন্যে এটি এক উপদেশ। (সূরা: হুদ, আয়াত: ১১৪)

(৭) অতঃপর যখন তোমরা নামায সম্পন্ন কর, তখন দন্ডায়মান, উপবিষ্ট ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর। অতঃপর যখন বিপদমুক্ত হয়ে যাও, তখন নামায ঠিক করে পড়। নিশ্চয় নামায মুসলমানদের উপর ফরয নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে।  (সূরা: নিসা, আয়াত: ১০৩)

(৮) সূর্য হেলে পড়ার পর থেকে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত কায়েম করো এবং কায়েম কর ফরজের কোরআন পাঠও (অর্থাৎ সালাতুল ফরজ)। নিশ্চয় ফজরের পাঠ ( সালাতুল ফরজ) প্রত্যক্ষ করা হয়। (সূরা: বানী ইসরাইল, আয়াত: ৭৮)

(৯) ওহে যারা ঈমান এনেছ! জুমার দিনে যখন তোমাদেরকে সালাতের জন্যে ডাকা হয় তখন তোমরা  আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় পরিত্যাগ কর। এটি তোমাদের জন্যে উত্তম –যদি তোমরা জানতে। (সূরা: জুমা, আয়াত: ৯)

(১১) সুতরাং ওই সব নামাজির জন্য দুঃখ, যারা নিজেদের নামাজসমূহে অলসতা করে। যারা লোককে দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে। (সূরা: মাউন, আয়াত: ৪-৫-৬)

(১২) নিশ্চয় মুমিনগণ সফলকাম, যারা নিজেদের নামাজে অন্তরের বিনয় প্রকাশ করে। (সূরা: মু‘মিন, আয়াত: ১-২)

(১৩) সজাগ দৃষ্টি রেখ সমস্ত নামাজের প্রতি এবং মধ্যবর্তী নামাজের প্রতি। আর আল্লাহর সামনে আদব সহকারে দাড়াও। (সূরা: বাকারা, আয়াত: ২৩৮)

নামাজ সম্পর্কিত হাদিস

হাদিস নম্বর-১:হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ইসলামের ভিত্তি ৫টি জিনিসের ওপর স্থাপিত- ১. এ সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসূল।২. নামাজ কায়েম করা। ৩. জাকাত আদায় করা। ৪. বাইতুল্লাহর হজ করা এবং ৫. রমজানের রোজা রাখা। (বোখারী ও মুসলিম)

হাদিস নম্বর-২:ইমাম আহমদ হাসান সনদে ও আবূ ইয়ালা কর্তৃক বর্ণিত। হজরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন- নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাজে তিনটি বিষয় থেকে নিষেধ করেছেন। ১. মোরগের মত ঠোকর মারতে ২. কুকুরের মত বসতে এবং ৩. শৃগালের মত এদিক সেদিক তাকাতে। (আহমদ-২৯৯)

হাদিস নম্বর-৩:ইমাম বোখারী তারিখে এবং ইবনে হুযায়মা প্রমুখ হজরত খালিদ বিন ওয়ালিদ, হজরত আমর বিন আস, হজরত ইয়াযিদ বিন আবূ সুফিয়ান ও হজরত শারাহবীল বিন হাসনাহ রাদিয়াল্লাহু আনহুম থেকে বর্ণনা করেন, একদিন হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক ব্যক্তিকে নামাজ আদায় করতে দেখলেন যে, রুকূ পুরোপুরিভাবে করছে না এবং সিজদায় ঠোকর মারছে। হুজুর নির্দেশ দিলেন, পরিপূর্ণভাবে রুকূ কর এবং এ-ও ইরশাদ করলেন, এ ব্যক্তি যদি এ অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তবে মিল্লাতে মুহাম্মাদী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছাড়া অন্য মিল্লাতে মৃত্যুবরণ করবে। তারপর ইরশাদ করলেন, যে ব্যক্তি পরিপূর্ণভাবে রুকূ করে না এবং সিজদায় ঠোকর মারে ওই ভুখার মত যে এক দু’টি খেজুর খেয়ে নেয়, যা কোনো কাজ দেয় না। (মু’জামুল কাবীর, ১৫৮)

হাদীস নম্বর-৪:আবু কাতাদাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন যে, হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-সবচেয়ে বড় চোর সেই, যে নিজ নামাজ চুরি করে। কেউ আরজ করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! নামাজ কীভাবে চুরি করে? ইরশাদ করলেন, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় করে না। (মুজামুল কাবীর-২০৮)

হাদীস নম্বর-৫: ইমাম মালিক ও আহমদ হজরত নুমান বিন মুররাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুদূদ বা শরয়ী শাস্তির বিধান অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে সাহাবায়ে কেরামগণকে বললেন- মদ্যপায়ী ব্যভিচারী ও চোর সম্পর্কে তোমাদের কী ধারণা? সকলে আরজ করলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম খুব ভাল জানেন। ইরশাদ করলেন, এসব অত্যন্ত মন্দ এবং এতে শাস্তি রয়েছে। আর সবচেয়ে বড় চুরি হচ্ছে, লোক নিজ নামাজ চুরি করা। আরজ করা হলো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! নিজ নামাজ কীভাবে চুরি করে? ইরশাদ করলেন, এভাবে যে, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় না করা। (আল মুসান্নাফ ৩৭০/ জা‘মউ বায়ানিল ইলমে ওয়া ফাদ্বলিহি, ৪৮০)

হাদীস নম্বর-৬: সহীহ বোখারীতে হজরত শফীক থেকে বর্ণিত, হজরত হুযায়ফা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন-তিনি এক ব্যক্তিকে দেখলেন, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় করছে না। যখন সে নামাজ শেষ করল তিনি তাকে কাছে ডেকে বললেন, তোমার নামাজ হয়নি। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা হচ্ছে, তিনি এ-ও বলেছেন যে, যদি তুমি এভাবে নামাজ পড়তে পড়তে মৃত্যুবরণ কর তবে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দ্বীনের ওপর তোমার মৃত্যু হবে না। (বোখারী)

হাদীস নম্বর-৭:ইমাম আহমদ হজরত মুতলাক বিন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন যে, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বান্দার ওই নামাজের প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন না, যাতে রুকূ ও সিজদার মাঝখানে পিঠ সোজা করা হয় না। (আহমদ)

হাদিস নম্বর-৮: ইমাম তিরমিযী হাসান সনদে বর্ণনা করেন যে, হুজুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হজরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহুকে বললেন, হে বৎস! নামাজে এদিক সেদিক তাঁকানো থেকে বিরত থাক। কারণ নামাজে এদিক সেদিক তাঁকানোই ধ্বংস। (তিরমিযী)

হাদিস নম্বর-৯: বোখারী, আবু দাউদ, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ হজরত আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- কী হলো ওই সব লোকের, যারা নামাজের মধ্যে আসমানের দিকে চোখ তুলে তাকায়। তা থেকে বিরত থাক, অন্যথায় তাদের চোখ ছিনিয়ে নেয়া হবে। (বোখারী)

হাদিস নম্বর-১০: দারেমী হজরত কা’ব বিন উজরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন, হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ মহান প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তায়ালা বলেন-যে ব্যক্তি যথাসময়ে নামাজ সম্পন্ন করবে, তার জন্য আমার প্রতিশ্রুতি হলো, তাকে আমি জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর যে ব্যক্তি যথাসময়ে পড়বে না এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করবে না তার জন্য আমার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই। চাইলে দোযখে প্রবেশ করাব আর চাইলে জান্নাতে প্রবেশ করাব। (দারেমী, ফতওয়ায়ে রযভীয়্যাহ)

হাদিস নম্বর-১১:হজরত হাসান রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন-যার নামাজ তাকে অশ্লীল ও নিষিদ্ধ কাজসমূহ থেকে বিরত রাখে না, তা নামাজই নয়। (তাবরানী)

হাদিস নম্বর-১২:তাবরানী আওসাত্ব গ্রন্থে হজরত আনাস বিন মালিক থেকে বর্ণনা করেন। হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যথাসময়ে সম্পন্ন করে এবং উহার ওজু, কিয়াম, খূশূ, রুকূ ও সিজদা পুরোপুরিভাবে আদায় করে ওই সব নামাজ উজ্জ্বল আলো হয়ে এ বলে বের হয় যে, আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করুন, যেমনি তুমি আমাকে রক্ষা করেছ। আর যে ব্যক্তি যথাসময়ে নামাজ না পড়ে অন্য সময়ে পড়ে এবং ওজু, কিয়াম খূশূ, রুকূ ও সিজদা পরিপূর্ণভাবে করে না, ওই নামাজ কালো অন্ধকার হয়ে এ বলে বের হয় যে, আল্লাহ তোমাকে ধ্বংস করুক, যেভাবে তুমি আমাকে নষ্ট করেছ। শেষ পর্যন্ত ওই স্থানে নিয়ে পৌঁছে যেখান পর্যন্ত পৌঁছা আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করেন, সেখান থেকে পুরানো আবর্জনার মতো একত্রিত করে তার মুখে নিক্ষেপ করা হয়। (তাবরানী)

হাদিসন নম্বর-১৩: হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিও না, কারণ যে ব্যক্তি স্বইচ্ছায় নামায ছেড়ে দেয় আল্লাহ ও রাসূল তার থেকে দায়মুক্ত। (আহমদ)

হাদিস নম্বর-১৪:হজরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, কেয়ামতের দিন বান্দার আমলের মধ্যে যে আমলটির হিসেব সর্বপ্রথম নেয়া হবে তা হচ্ছে নামাজ। যদি এ হিসেবটি নির্ভূল হয় তবে সে সফল হবে ও নিজের লক্ষে পৌঁছে যাবে। আর যদি এ হিসেবটিতে ভুল বা ত্রুটি দেখা যায় তবে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও ধ্বংস হয়ে যাবে। যদি তার ফরজগুলোর মধ্যে কোনো কমতি থাকে তবে মহান ও পরাক্রমশালী আল্লাহ বলবেন, দেখ আমার বান্দার কিছু নফলও আছে কীনা, তার সাহায্যে তার ফরজসমূহের কমতি পূরণ করে দাও। এরপর সব আমলের হিসেব এভাবেই নেয়া হবে। (তিরমিযী)

হাদিস নম্বর-১৫: হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হতে বর্ণিত তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ শুরু করতেন আল্লাহু আকবার দ্বারা এবং কেরাত শুরু করতেন  আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামীন দ্বারা। আর যখন রুকূতে যেতেন তখন মাথা উপরে তুলেও রাখতেন না, আবার নিচের দিকে ঝুকিয়েও রাখতেন না। বরং দুইয়ের মাঝামাঝি রাখতেন। আর যখন রুকূ হতে মাথা উঠাতেন তখন সোজা হয়ে না দাড়ানো পর্যন্ত সিজদায় যেতেন না। আর সিজদা হতে উঠে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত দ্বিতীয় সিজদায় যেতেন না। আর প্রত্যেক দুই রাকাতের মধ্যে আত্তাহিয়্যাতু (তাশাহুদ) পাঠ করতেন, আর বসার সময় বাম পা বিছিয়ে দিতেন এবং ডান পা খাড়া করে রাখতেন। এবং শয়তানের  ন্যায় হাটু খাড়া করে বসতে নিষেধ করেছেন এবং কোনো পুরুষকে তার হাত হিংস্র পশুর ন্যায় মাটিতে বিছিয়ে দিতেও  নিষেধ করেছেন, সবশেষে তিনি সালামের দ্বারা নামাজ শেষ করতেন।

হাদিস নম্বর-১৬: হজরত জাবের রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের উদাহরণ হলো, যেমন তোমাদের কারো ঘরের দরজার পাশেই একটি পানি পূর্ণ প্রবাহমান নদী, আর ওই লোক তাতে প্রতিদিন পাঁচবার গোসল করে। (মুসলিম)

হাদিস নম্বর-১৭: হজরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত-  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজে মানুষের ইমামতি করে, সে নামাজ সংক্ষেপ করবে। কেননা, তাদের মধ্যে দুর্বল, রুগ্ন ও বৃদ্ধ ব্যক্তি থাকতে পারে। যখন তোমাদের কেউ একাকী নামাজ আদায় করবে, তখন সে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী নামাজ সুদীর্ঘ করবে। (বোখারী ও মুসলিম)

হাদিস নম্বর-১৮: হজরত ইমরান বিন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নামাজ দাঁড়িয়ে আদায় করবে, যদি অসমর্থ হও তখন বসে আদায় করবে আর যদি তাও না পার তখন শুয়ে আদায় করবে। (বোখারী)

হাদিস নম্বর-১৯: হজরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত,নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুম্মাহ হতে অপর জুম্মাহ এবং এক রমজান হতে অপর রমজান, এসবের মধ্যবর্তী সময়ে যে সব সগীরা গুনাহ হয় তার জন্য কাফফারা স্বরূপ, যখন কবীরা গুনাহ থেকে দূরে থাকে। (মুসলিম) সংগৃহীত সূত্র- ডেইলি বাংলাদেশ


নামাজ না পড়ার শাস্তি!

আল্লাহ পাক তাঁর কোরআন পাকে ঘোষনা করেছেন-
فَوَيْلُ لِّلْمُصَلِّيْنَ الَّذِيْنَ هُمْ عَنْ صَلَوتِهِمْ سَاهُوْنَ
উচ্চারনঃ ফাওয়াইলুলি্লল মুছালি্লনাল্লাজিনাহুম আনছালাতিহিম ছাহুন।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন -জাহান্নাম নামক দোযখে বিরাট একটি গর্ত আছে তাহার নাম অয়েল। এই জায়গা এতই কঠিন আজাবে পরিপূর্ণ যে, অন্যান্য দোযখীগণ প্রত্যেক দিন সত্তর বার আল্লাহ পাকের নিকট আরজ করবে, হে আল্লাহ্ তাবারুক তায়ালা! তুমি আমাদিগকে ঐ অয়েল দোযখ হইতে রক্ষা করিও।
যাহারা নামায পড়িতে আলস্য করে সময়মত নামায পড়েনা, মাঝে মাঝে পড়ে এইরূপ ব্যক্তিদের কেমন শাস্তি হইতে পারে।
হাদীসে উল্লেখ আছে, প্রতি ওয়াক্ত নামায ছাড়িয়া দেয়ার জন্য আশি ছোকবা দোযখে থাকতে হবে। দুনিয়ার আশি বৎসর সমান এক ছোকবা হয়। তাহার আশি ছোকবা অর্থৎ ১৬০০ (এক হাজার ছয়শত) বৎসর এক ওয়াক্ত নামায কাযা করলে দোযখে থাকতে হবে। যাহারা মোটেই নামায পড়েনা এবং নামাযের প্রতি মিশ্বাসও রাখেনা তাদের অনন্তকাল দোযখে থাকতে হবে।
নবী করীম (সাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, মুসলমান এবং কাফেরের মধ্যে পাথক্য এই, মুসলমান নামায পড়ে আর কাফের নামায পড়ে না।
নামাজ না পড়ার ১৫ টি শাস্তি!
যারা নামায পড়েনা তাদের জন্য আল্লাহ্ পাক পনেরটি আজাব নির্দিষ্ট করিয়া রাখিয়াছেন। পনেরটি আজাবের মধ্যে ছয়টি দুনিয়ায়, তিনটি মৃত্যুর সময়, তিনটি কবরের মধ্যে এবং বাকি তিনটি হাশরের মধ্যে দেয়া হবে। দুনিয়াতে যে ছয়টি আযাব দেওয়া হয় . ১. তাহার জীবনে কোনরূপ বরকত পাইবেনা। ২. আল্লাহ্ তার চেহারা হইতে নেক লোকের চিহ্ন উঠাইয়া লইবেন। ৩. যে যাহা কিছু নেক কাজ করবে, তাহার ছওয়াব পাইবেনা। ৪. তাহার দোয়া আল্লাহ্ পাকের নিকট কবুল হইবে না। ৫. আল্লাহ্ পাকের সমস্ত ফেরেশতা তাহার উপর অসন্তুষ্ট থাকবে। ৬. ইসলামের মূল্যবান নেয়ামত সমূহ হইতে বঞ্চিত করা হইবে । মৃত্যুর সময় যে তিনটি আযাব দেওয়া হয় : . ১. অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত হইয়া মৃত্যুবরণ করিবে। . ২. ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত্যু বরন করিবে। . ৩. মৃত্যুকালে তাহার এত পিপাসা পাইবে যে,তাহার ইচ্ছা হইবে দুনিয়ার সমস্ত পানি পান করিয়া ফেলিতে । কবরের মধ্যে যে তিনটি আযাব দেওয়া হয় : . ১. তাহার কবর এমন সংকীর্ণ হবে যে তাহার এক পাশের হাড় অপর পাশের হাড়ের সংগে মিলিত হইয়া চূর্ণবিচূর্ণ হইয়া যাইবে। . ২. তাহার কবরে, দিনরাত্রি সবসময় আগুন জ্বালাইয়া রাখা হবে। . ৩. আল্লাহ্ তাহার কবরে একজন আজাবের ফেরেশতা নিযুক্ত করিবেন। তাহার হাতে লোহার মুগুর থাকবে। সে মৃত ব্যক্তিকে বলতে থাকবে যে,দুনিয়ায় কেন নামায পড় নাই। আজ তাহার ফল ভোগ কর। এই বলিয়া ফজর নামায না পড়ার জন্য ফজর হইতে জোহর পর্যন্ত, জোহর নামাযের জন্য জোহর থেকে আছর পর্যন্ত, আছরের নামাযের জন্য আছর থেকে মাগরিব পর্যন্ত, মাগরিবের নামাযের জন্য মাগরিব হইতে এশা পর্যন্ত এবংএশার নামাযের জন্য এশা হইতে ফজর পর্যন্ত লোহার মুগুর দ্বারা আঘাত করতে থাকবে। . আর বাকি তিনটি দেয়া হবে রোজ হাসরের দিন কিয়ামতের ময়দানে।

(নামাজ না পড়ার শাস্তির ঘটনা, নামাজ না পড়ার শাস্তি মৃত্যুর পর, নামাজ না পড়ার শাস্তি হাদিস ,নামাজের ওযু ভঙ্গের কারণ) 

নেট থেকে সংগৃহীত- 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে একটিভ থাকুন

১লা মে দিবস / শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন

১লা মে দিবসের ছবি ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। ১লা মে মহান মে দিবস। ১লা মে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ স...