স্বাগতম

সবার জন্য উন্মুক্ত পেইজ ভিজিট করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। *** শিক্ষার কোন বয়স নাই, জানার কোন শেষ নাই। *** বিঃদ্র ( যে সকল ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর লেখা কোন অনুমতি ছাড়া কপি করে এখানে পোষ্ট করেছি, যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে দয়া করে জানাবেন। E-mail: nchafa10@gmail.com, ভালো লাগলে আবার আসবেন।***ধন্যবাদ***

শীতে মানুষ বিয়ে করে কেন-----

সবকিছুরই একটা সিজন আছে। সেই হিসেবে বিয়েরও সিজন থাকতেই পারে। বিয়ের সিজন কোনটা, সেটা সবার জানা। একটু বিশদভাবে বললে বলা যায়, অনেকে হয়তো ‘বাংলাদেশের রাজধানী কোথায়’ টাইপের প্রশ্নের উত্তর না জানতে পারে, কিন্তু বিয়ের সিজন কোনটা, সেটা অবশ্যই জানে। জি, বিয়ের সিজন হচ্ছে শীতকাল। আর সেই শীতকালই চলছে এখন। যে কারণে চারপাশে এখন চলছে বিয়ের ধুম। মানুষ কারণে অকারণে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে বিয়ে করছে। আমার এক চাচা বললেন, ‘শীতকাল আসার পর থেকেই মানুষ উত্সবমুখর পরিবেশে বিয়েশাদি করছে, বিষয়টা অত্যন্ত ইতিবাচক। এই জন্য আমি সদ্য বিবাহিত অ্যান্ড বিবাহিতাদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। তবে তাদের পরিণতির কথা ভেবে আমার একটু কষ্টও হচ্ছে।’ আমি বললাম, ‘পরিণতি মানে কী? বিয়ে করলে মানুষের স্বাধীনতা কমে যায়, আপনি কি এটাই বলছেন?’ চাচা বললেন, ‘এটা কোনো পরিণতি নারে পাগলা। আসল পরিণতি হচ্ছে সর্দি-কাশি।’ আমি চাচার দিকে ক্যাবলাকান্তের মতো তাকিয়ে রইলাম। চাচা খুব ভালো করেই বুঝলেন আমি তার কথার আগাও বুঝিনি, মাথাও বুঝিনি। তাই তিনি ভালো করে বোঝালেন, ‘বিয়ে করতে যাওয়ার সময় বর যদি শীতে কাঁপতে কাঁপতে পড়েও যায়, সে কিন্তু বিয়ের পোশাকের উপর কোনো শীতের কাপড় পরে না। কনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। তার মানে বিয়ের কারণে ছেলেমেয়েরা প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও গরম কাপড় পরতে পারে না। বিয়ের আসরে বসে কাঁপে, পরবর্তীতে সর্দি কাশি বাধায়। গরমকালে বিয়ে হলে কিন্তু এই বিপদটা হতো না।’


চাচার কথা থেকে চলে যাওয়া যাক আমার এক বন্ধুর কথায়। সে বিয়ে করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। শীত থাকতে থাকতে সে বিয়েটা করে ফেলবে—এটাই তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। সে আমাকে পর্যাপ্ত আগ্রহের সঙ্গে তার বাসায় নিয়ে গেল। বলল, ‘বিয়ের জন্য বেশ কিছু কেনাকাটাও করে ফেলেছি দোস্ত। এই দেখ পাঞ্জাবি, এই যে পায়জামা, এই যে জুতা, এই যে মুকুট।’ বন্ধু এভাবে দেখাতে দেখাতে প্রায় সব জিনিসই দেখিয়ে ফেলল। তবে সব জিনিসের মধ্যে একটা জিনিস আমার চোখে পড়ে গেল। জিনিসটা হলো মুকুট। আমার কাছে মনে হলো মুকুটটা মাপছাড়া। সাইজে বিরাট বড়। আমি বন্ধুকে বলল, ‘মুকুটটা কেনার সময় মাথায় পরে দেখলি না?’ বন্ধু বলল, ‘পরেই কিনেছি।’ আমি বললাম, ‘পরে কিনলে এত বড় কিনেছিস কেন? এই মুকুট পরলে তোর নাক-মুখ-কান পর্যন্ত ঢেকে যাবে। মনে হবে একটা হেলমেট পরে আছিস।’ বন্ধু বলল, ‘কেন বড় কিনেছি, সেটা একমাত্র আমিই জানি। তুই যেহেতু আমার কাছের বন্ধু, অতএব তোকেও জানানো যেতে পারি। আসলে এখন শীতকাল তো! আর শীতের মধ্যে বাইরে বের হলে কিন্তু পর্যাপ্ত শীত লাগে। আর শীতটা লাগে কোথায়? লাগে দুই কানে। এজন্যই আমি বড় সাইজের দেখে মুকুটটা কিনেছি। বলতে পারিস মুকুটটাকে আমি কানটুপি হিসেবে ব্যবহার করবো।’

আমার এক বড় ভাই বললেন, ‘শীতের দিনে বিয়ে করার মধ্যে কিন্তু নানাবিধ উপকারিতা আছে।’ আমি বললাম, দুয়েকটা উপকারিতার কথা বলেন ভাই। জাতির কাজে লাগবে। জাতি উপকৃত হবে।’ বড় ভাই বললেন, ‘শীতে বিয়ে করার নানা উপকারিতার অন্যতম উপকারিতা হলো, আর্থিক নিরাপত্তা।’ আমি আগ্রহের সহিত জানতে চাইলাম, ‘কী ধরনের আর্থিক নিরাপত্তা?’ বড় ভাই বললেন, ‘আমি যত বিয়েতে গিয়েছি, প্রায় সব বিয়েতেই একই ধরনের কাণ্ড ঘটেছে। বরযাত্রীকে গেটে আটকিয়েছে। বড় ধরনের অ্যামাউন্ট দাবি করেছে। একটা হট্টগোল বাঁধিয়েছে। তারপর বেয়াই-বেয়াইনদের মধ্য থেকে কে বা কারা বরপক্ষের লোকজনের পকেট সাবাড় করেছে। কিন্তু শীতকালে যতগুলো বিয়ে হয়েছে, কোনো বিয়েতে কিন্তু পকেট সাবাড় করার ঘটনা ঘটেনি। কী বিরাট ব্যাপার না?’ আমি বললাম, ‘অবশ্যই বিরাট ব্যাপার। কিন্তু শীতকালে পকেট সাবাড় করার ঘটনা কেন ঘটে না বলেন তো! গরমকালে যদি বেয়াই-বেয়াইনরা বরপক্ষের লোকজনের পকেট সাবাড় করতে পারে তাহলে শীতকালে তারা কী এমন সাধু হয়ে যায় যে পকেটে হাত দেবে না?’ বড় ভাই বললেন, ‘এটা সাধু হওয়া না-হওয়ার ব্যাপার না। ব্যাপার হচ্ছে শীতকালে বরপক্ষের লোকজন শীতের কবল থেকে হাত বাঁচানোর জন্য হাত পকেটে ঢুকিয়ে রাখে। ব্যস, বেয়াই-বেয়াইনরা পকেট লুটের সুযোগ পায় না। পকেটের টাকা থাকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত!’
শীতকালে বিয়ে করার আরও অনেক কারণ থাকে

এনার্জি
- দাওয়াত, খাওয়া-দাওয়া, প্যান্ডেল- কতো কাজই না করতে হয় বিয়েতে! ৪-৫ দিনের ধকল। সবাই মিলে হাত লাগিয়ে সারতে হয়। রাত জাগা, প্রভৃতি উৎপাতে এনার্জি খরচ হয় বিস্তর। তাই শীতই সই। শীতে অনেক কাজ করলেও এনার্জিতে ঘাটতি দেখা যায় না। 

উপোসের জন্য শীতকালই বেস্ট
- সেই কোন ভোরে খই দই খেয়ে সারাদিন উপোস, গরমে সইবে? শরীর ডিহাইড্রেট হয়ে বিয়ের সময় মাথা ঘুরিয়ে একশা। কিন্তু শীতে উপোসটা কোনও ব্যাপারই নয়।

সাজগোজের ব্যাপারটাও ইমপর্ট্যান্ট
- এ দেশের যা আবহাওয়া, শীত বাদে বাকি সময়টায় মেকআপ লাগিয়ে সাজলে মুশকিল। ঘেমেনেয়ে গলে গলে পড়ে সব সাজ। তাই কনের সাজ হোক বা বরের, শীতে যেমন খুশি সাজো, কুছ পরোয়া নেহি। বর-কনে ছাড়া বাকিরাও বিয়েবাড়ির সাজের আনন্দ নিতে পারে চুটিয়ে। 

কত ফুল, কত ডেকরেশন
- কৃত্রিম ফুলের প্রয়োজনও হয় না শীতকালে। ডালিম, রজনীগন্ধা, অর্কিড, গাঁদা, গোলাপ, জুঁই - সব টাটকা টাটকা পাওয়া যায় হাফ দামে। এবেলা সাজালে ওবেলায় পচে যায় না। 

যত খুশি খাও
- অম্বল হবে না। এমনিতেই শীতে হজমশক্তির বৃদ্ধি ঘটে। তাই ফিশফ্রাই, রোগানজোশ, বিরিয়ানি, পোলাও সবই এক থাকায় গপগপিয়ে সাবাড় করা যায় বিনা দ্বিধায়। তা ছাড়া, শীতকালীন কিছু বিশেষ খাবার ওঠে, যেমন গুড়, কমলা লেবু ইত্যাদি... সে সব খাওয়াদাওয়াকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়। 

হানিমুনের চার্ম
- বিয়ের পর খুব বেড়ানো যায়। রোদের তাপ নেই। ক্লান্তি নেই। বরের হাত ধরে নতুনের স্বাদটা ভালোই উপভোগ করা যায় শীতে। হানিমুনও জমে ক্ষীর!

শীতে বিয়ে করার সুবিধা

অতিরিক্ত বাজার করতে হবে না : শীত এলেই অনেকের ঠোঁট ফাটার সমস্যা হয়, আবার কারও বাতের ব্যারাম চেইত্তা যায়, অনেকের প্রেসার দিনে একশোবার আপ-ডাউন করে। আর সেই কারণে অনেক মানুষই বেশি খেতে পারে না। আর বেশি খেতে না পাড়া মানে আপনার বাড়তি বাজারের টাকাটা বেচে গেল।

* মৌসুমী ফল কেনার টেনশন নেই : গরম কালের মতো শীতে আম, লিচুর অতো বাম্পার ফলন নেই, তাই ফল কেনার ঝামেলাও নেই। একান্ত দরকার হলে ফল নয় বরং বাম্পার সবজি ফুলকপি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে চলে যান। এত বড় সাইজের ফুল পেয়ে কার না মন ভালো হয়? পছন্দ না হলেও সমস্যা নেই রান্না করে খেয়ে ফেলা যাবে।

* কারেন্ট বিল বেঁচে যায় : শীতকালে এমনিতেই ফ্যান চলে না, তার ওপর নতুন বউ ঘরে থাকলে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর একটা তাড়া থাকে বলে গুজব আছে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমানো মানে, সব লাইট-টিভি বন্ধ। আর সেই কারণে আপনার বিলটাও কম আসবে। বিশ্বাস না হলে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

* মশারি টানানোর ক্যাচাল নেই : নতুন বউয়ের দিকে তাকালে এমনিতেই মাথার নেটওয়ার্ক হারিয়ে যায়।
যেহেতু ঋতুটা শীতের তাই আপনার নেটওয়ার্ক হারাক আর তার-খাম্বা হারাক। আপনি যত অলসই হোন না কেন, মশারি টানানো নিয়ে আপনার কোনো চিন্তা নেই। কারণ কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমালে মশা কামড়ানোর আর কোনো চান্স নেই।

* প্রাইভেট কার খরচ বাঁচে : বিয়েবাড়িতে যেতে হলে পাবলিক একটু বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। গরম হলে তো একজনের সঙ্গে আরেকজনের গা লাগতেই লাফিয়ে উঠে। তাই গাড়ি নিতে হয় বেশি। বাট শীতকালে বিয়ে করলে আপনি, সব পাবলিকরে গাদাগাদি করে এক গাড়িতে ঢুকিয়ে দিতে পারবেন। এর জন্য বেশি গাড়ি ভাড়া করার দরকার নেই।

* চাঙ্গা ব্যবসা : শীতকালে বিয়ে হলে সবচেয়ে বেশি উপহার পাওয়া যায় কম্বল। অতিরিক্ত কম্বল বিক্রির ব্যবসা করতে পারেন। নেট সংগৃহীত- 

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে একটিভ থাকুন

১লা মে দিবস / শ্রমিকের অধিকার আদায়ের দিন

১লা মে দিবসের ছবি ১লা মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস পালন করা হয়। ১লা মে মহান মে দিবস। ১লা মে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ স...